বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া, কাল আমাদের দোল…,’ হোলির (Holi) আগের দিন হচ্ছে দোল পূর্ণিমা (Dolyatra)। আর তার আগের রাতে বাংলার অলিগলিতে এই প্রবাদটি শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দায়। শুধু বাংলা নয়, দোল পূর্ণিমার আগের রাতে গোটা ভারতের মহা সাড়ম্বরে পালিত হয় হোলিকা দহন উৎসব। বাংলায় হোলিকা দহনই স্থানীয়ভাবে পরিচিত ন্যাড়াপোড়া নামে।
হোলির (Holi) আগে এক বিশেষ উৎসব
আবার কোথাও কোথাও চাঁচর পোড়া নামেও পরিচিত এই পার্বণ। ভাষা-অঞ্চল বিশেষে হোলিকা দহন (Holika Dahan) পরিচিত একাধিক নামে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও, ধর্মীয় মাহাত্ম্যের জন্য দোল পূর্ণিমার আগের রাতে গোটা দেশেই পালিত হয় বিশেষ এই রীতি। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, হিরণ্যকশিপু ছিলেন প্রাচীনকালের দাম্ভিক ও অত্যাচারী এক রাক্ষস রাজা।
আরও পড়ুন : সদ্য শেষ হয়েছে সিরিয়াল, আবারও জি-তেই ফিরছেন “বেঙ্গল টপার” নায়িকা! প্রকাশ্যে ধামাকা প্রোমো
তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সমতুল্য মনে করতেন। রাক্ষস রাজার তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা হিরণ্যকশিপুকে অমরত্বের বর প্রদান করেন। তবে হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণু ভক্ত। নিজের ছেলের বিষ্ণুপ্রীতি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি হিরণ্যকশিপু। সেই আক্রোশ থেকেই প্রহ্লাদের উপর নানা রকম অত্যাচার শুরু করেন রাক্ষস রাজা।
তবে বিষ্ণুর আশীর্বাদে প্রতিবারই বিপদ থেকে রক্ষা পেতেন প্রহ্লাদ। অবশেষে উপায় না পেয়ে বোন হোলিকার সাহায্যে প্রহ্লাদকে শেষ করার ফন্দি আঁটেন হিরণ্যকশিপু। হোলিকার কাছে ব্রহ্মা প্রদত্ত এমন একটি শাল ছিল যেটি গায়ে জড়ানো থাকলে আগুনও স্পর্শ করতে পারত না হোলিকাকে।
আরও পড়ুন : বয়স সবে ২০ পেরিয়েছে, সুকান্তর সঙ্গে “লিপলক”এর পর এবার বিকিনি! বাগদান সেরেই ট্রোলড ‘সঞ্জনা’ অনন্যা
হিরণ্যকশিপু ফন্দি এঁটে ঠিক করেন, প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে গায়ে শাল জড়িয়ে হোলিকা বসবেন আগুনের মধ্যে। সেই আগুনে হোলিকা অক্ষত থাকলেও, আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাবেন প্রহ্লাদ। তবে বিষ্ণুর অশেষ কৃপায় আগুনে বসার সাথে সাথেই হোলিকার গা থেকে শাল উড়ে গিয়ে পড়ে প্রহ্লাদের গায়ে। সেই আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যান হোলিকা, অক্ষত থাকেন প্রহ্লাদ।
জানা যায়, পাঞ্জাবের মুলতান অঞ্চলের প্রহ্লাদপুরী মন্দিরে সূচনা হয়েছিল এই প্রথার। এরপর ধীরে ধীরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এই পার্বণ। অশুভ শক্তির বিনাশের মধ্যে দিয়ে শুভ শক্তির উত্থানের নামই হোলিকা দহন। আগামী ১৩ মার্চ শুভ শক্তির উন্মোচনের উদ্দেশ্যে গোটা দেশ জুড়ে পালিত হতে চলেছে এই উৎসব (Festival)।