বিয়ের বদলে পড়াশোনা, ছাত্রীর ওপর পড়ল ছুরির কোপ! মামলা উঠতেই বিরাট নির্দেশ হাই কোর্টের

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এদেশে এমন অনেক মেয়ে রয়েছে যাদের ‘ফোকাস’ বিয়ে নয়, বরং পড়াশোনা করে স্বাবলম্বী হওয়া। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চান অনেকেই। হুগলি জেলার চণ্ডীতলা থানা অঞ্চলের শ্যামসুন্দর গ্রাম নিবাসী মেয়েটির বিয়ের পরিবর্তে পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ তাঁর ওপর পড়ল ছুরির কোপ! এবার এই ঘটনায় বিরাট নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।

জানা যাচ্ছে, ওই ছাত্রীর পড়াশোনা যাতে আটকানো যায় সেই জন্য সালিশি সভা বসেছিল! কিন্তু মেয়েটি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে সে কলকাতার (Kolkata) হাজরা ল কলেজে (Hazra Law College) ভর্তি হয়। সেখানেও দুষ্কৃতিরা পৌঁছে যায় বলে অভিযোগ। ছুরি দিয়ে কেটে নেওয়া হয় মেয়েটির হাত। বৃহস্পতিবার ন্যায় বিচার চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha) এই মামলায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের (Chandannagar Police Commissionerate) ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিককে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় আবার হুগলি গ্রামীণ পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। দুষ্কৃতীদের আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। হাই কোর্ট স্পষ্ট বলেছে, হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কিংবা স্থানীয় পঞ্চায়েত এই মামলার তদন্তে যেন কোনও ভাবেই কোনও রকম হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা না করে।

আরও পড়ুনঃ চমকের পর চমক! বিধানসভা উপনির্বাচনে কাদের টিকিট দেবে BJP? নাম ফাঁস হতেই তোলপাড়!

মামলার শুনানি চলাকালীন ওই ছাত্রীর আইনজীবী শামিম আহমেদ আদালতকে বলেন, নিরাপত্তা চেয়ে মেয়েটি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল। তবে জেলা পুলিশ কিংবা স্থানীয় থানা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। পুলিশের তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা তো দূর, বরং বারবার দুষ্কৃতিদের হামলা সইতে হয়েছে ওই মেয়েটিকে।

এই বিষয়ে ওই ছাত্রীর পরিবার হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনও সুরাহা হয়নি। উল্টে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সালিশি সভা ডেকে সমস্যাটি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়।

Case against Calcutta High Court Justice Amrita Sinha on giving her Police related case

এসব বিষয় শোনার পর বিচারপতি সিনহা স্পষ্ট নির্দেশ দেন, এই মামলায় হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কিংবা তার অধস্তন কোনও পুলিশকর্মী যুক্ত থাকতে পারবেন না। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকের ওপর। একইসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েতও যাতে এই মামলার তদন্তে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা না করে, সেটাও বলা হয়েছে।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর