বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ পাকিস্তান অর্থনৈতিক (Pakistan Economic Crisis) সংকটে ধুঁকছে। সে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ (Foreign Exchange Reserves) নিঃশেষের পথে। আকাশ ছুঁয়েছে মূল্যস্ফীতি। অবস্থা এতটাই খারাপ যে আটা-রুটিরও অভাব দেখা দিয়েছে। অদ্ভুত ভাবে আজ থেকে প্রায় ৬০ বছর আগে পাকিস্তান (Pakistan) ভারতের চেয়ে ধনী ছিল। মানুষের পকেটে টাকা ছিল।
কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও দেশের ‘সন্ত্রাস’ (Terrorism) এবং অযোগ্য নেতৃত্ব এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়েছে। আজ পাকিস্তান আমেরিকা, সৌদি আরবের মতো দেশগুলির কাছে কার্যত ভিক্ষা চাইছে। যত দিন যাচ্ছে পাকিস্তানের পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকারও মেনে নিয়েছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার বিরাট অবনতি হয়েছে।
এই মুহুর্তে গমের ঘাটতির কারণে আটার দাম পৌঁছেছে কেজি প্রতি ১৫০ টাকাতে, চিকেনের দাম ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি। দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা প্রতি লিটার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হয়েছে বন্ধ। ফলে পেট্রোল-ডিজেল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকটে ভুগছে মানুষ। এলপিজি সিলিন্ডারের দাম পাকিস্তানি মুদ্রায় ১০ হাজারে পৌঁছেছে।
পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার এখন ২৫ শতাংশ। সাধারণ মানুষের পকেটে টাকা নেই, অথচ একসময় এদের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে বেশি ছিল। দেশের এই অবস্থা হঠাৎ করে একদিনে ঘটে যায়নি। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একদিকে যখন পাকিস্তানের অর্থনীতির অবনতি হচ্ছিল, তখন দেশের জনগণের কল্যাণের চেয়ে সন্ত্রাসবাদ নীতির দিকেই বেশি নজর ছিল পাক সরকারের। এর পাশাপাশি বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও পাকিস্তানের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেয়।
১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট পাকিস্তানকে ভারত থেকে আলাদা একটি নতুন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৬০ সালে সে দেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে অনেক ভাল ছিল। মানুষের পকেটে বেশি টাকা ছিল। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৬০ সালে যেখানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল ৬,৭৯৭ পাকিস্তানি রুপি, তখন ভারতে এই সংখ্যাটি এর চেয়ে কম ৬,৭০৮ টাকা ছিল। অর্থাৎ ভারতের তুলনায় পাকিস্তানে মাথাপিছু আয় ছিল ৮৯ টাকা বেশি। কিন্তু ২০২১ সাল নাগাদ ভারতের মাথাপিছু আয় বেড়ে হয় ১,৮৫,৫৫২ টাকা। সেখানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ১,২৫,৪৯৬ টাকায়।
১৯৬০ সালে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৫.৪৬ হাজার কোটি টাকা, যেখানে পাকিস্তানের ছিল ২.৬১ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। কিন্তু ২০২১ সালে পাকিস্তানের ফরেক্স রিজার্ভ হয় মাত্র ৩৫,০০০ কোটি টাকা। অপরদিকে ভারত বিশ্বের দ্রুততম উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসাবে উঠে আসে। ২০২১ সালে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৪৫.৯২ লক্ষ কোটি টাকা হয়। এই মুহুর্তে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারে রয়েছে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার।