‘লাগবে না পরীক্ষার ফি, উলটে দেওয়া হবে পারিশ্রমিক’, ছাত্রদের স্কুলে ফেরাতে আর্জি শিক্ষকদের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কেউ গেছেন মাঠে ধান কাটতে, কেউ রুজি-রোজগারের সন্ধানে পাড়ি দিয়েছেন ভিন রাজ্যে- মাধ্যমিক টেস্টের প্রথম দিন অনুপস্থিত ছাত্রদের খুঁজতে বেরিয়ে এমন ঘটনারই সাক্ষী হলেন শিক্ষকরা। স্কুলে ফেরাতে ছাত্রদের বোঝালেন, ‘পরীক্ষা দিতে চল, প্রয়োজনে চারদিনের মজুরির টাকা দিয়ে দেব আমরা’।

মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে পূর্ব বর্ধমান (bardhaman) জেলার আউশগ্রামের কয়রাপুর বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। দীর্ঘ সময়ে পেরিয়ে করোনা আবহ কিছুটা থিত হতেই আবারও খুলে গিয়েছে স্কুল কলজের দরজা। কিন্তু স্কুল খুললেও ছাত্র ছাত্রী কই?

School teachers 3 768x427 1

আউশগ্রামের কয়রাপুর, ভাদা, করুঞ্জি ও ভাতারের আমবোনা-সহ বিভিন্ন গ্রাম মিলে প্রায় সাড়ে পাঁচশো ছাত্রছাত্রী পড়শুনা করেন কয়রাপুর বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে। আর সেখানেই মঙ্গলবার থেকে মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হতেই শিক্ষকরা দেখেন, ১৫ -১৬ জন পড়ুয়া প্রথম দিনেই অনুপস্থিত।

সময় নষ্ট না করে পড়ুয়াদের খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক সতীনাথ গোস্বামী ও সহ শিক্ষকরা। করুঞ্জি, ভাদা, কয়রাপুর ও ভাতারের আমবোনা গ্রামে ঘোরেন শিক্ষকরা। গিয়ে দেখেন কেউ কাজে লেগে পড়েছেন মাঠে ধান কাটতে, আবার কেউ বেরিয়ে পড়েছেন ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে।

সেইসকল পড়ুয়াদের এবং তাঁদের বাবা মায়েদের অনেক করে রীতিমত হাতে পায়ে ধরে পড়ুয়াদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রাজী করায়। আশ্বাস দেন, পড়ুয়ারা স্কুলে এলে বই, খাতার খরচও জোগাবেন শিক্ষকরা, কোন সমস্যাই হবে না তাঁদের। উলটে তাঁদের কাজে যাওয়ার পারিশ্রমিকও দেবেন তাঁরা।

এবিষয়ে সতীনাথ গোস্বামী বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক কারণ, পরীক্ষা নিয়ে ভয় এবং অসুস্থ থাকার কারণে অনেকেই পরীক্ষা দিতে আসেনি। আমরা ওদের অনেক কষ্টে রাজী করাই। বই, খাতা থেকে শুরু করে স্কুলের ফি কিছুই তাঁদের দিতে হবে না বলে জানাই। উলটে আমরা তাঁদের পারিশ্রমিক দেব বলে কথা দিয়েছি। আশা করছি তাঁরা আমাদের আবেদনে সাড়া দেবে’।

Smita Hari

সম্পর্কিত খবর