ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে পাকিস্তানের দাবি খারিজ করল ভারত! মোক্ষম জবাব দিল বিদেশমন্ত্রক

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের তোলা সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে কড়া ও স্পষ্ট জবাব দিল ভারত (India)। নয়াদিল্লি জানিয়ে দিল, নিজের দেশের ভয়াবহ ও প্রাতিষ্ঠানিক সংখ্যালঘু নিপীড়নের ইতিহাস আড়াল করতেই ভারতের দিকে আঙুল তুলছে ইসলামাবাদ। সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাফ বলেন, যে দেশের এই বিষয়ে রেকর্ড এতটাই শোচনীয়, তাদের মন্তব্য ভারত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করছে। তাঁর বক্তব্য, পাকিস্তানে বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর যে ভয়ঙ্কর নিপীড়ন চলছে, তা সুপ্রতিষ্ঠিত সত্য এবং শুধু অভিযোগ তুললেই সেই বাস্তব আড়াল করা সম্ভব নয়।

সংখ্যালঘু নিয়ে পাকিস্তানের অভিযোগে কড়া ও স্পষ্ট জবাব দিল ভারত (India)

এই কূটনৈতিক টানাপড়েনের সূত্রপাত পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র তাহির আন্দ্রাবির মন্তব্যকে ঘিরে। একটি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আন্তর্জাতিক মহলকে ভারতের দিকে নজর দেওয়ার আর্জি জানান। তাঁর দাবি ছিল, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বাড়ছে। তিনি ‘ক্রিসমাসে ভাঙচুর’, ‘মুসলিমদের উপর আক্রমণ’ এবং এমনকি ‘লিঞ্চিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের রক্ষা করা হচ্ছে’—এই ধরনের অভিযোগও তোলেন। পাশাপাশি ২০১৫ সালের দাদরি কাণ্ডে মহম্মদ আখলাকের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এনে ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেন তিনি।

আরও পড়ুন:শক্তি বাড়বে ভারতীয় সেনার! তিন বাহিনীর জন্য ৭৯,০০০ কোটি টাকার সামরিক সরঞ্জাম, মিলল কেন্দ্রের অনুমোদন

কিন্তু সেই অভিযোগের পরই কড়া পাল্টা বার্তা দেয় নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, যে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক স্তরে চলে আসছে, সেই দেশের তরফে ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য নৈতিক দিক থেকেই অসংগত। পাকিস্তানে হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, আহমদিয়া-সহ একাধিক ধর্মীয় গোষ্ঠীর উপর নিপীড়নের অভিযোগ নতুন নয়। জোরপূর্বক ধর্মান্তরণ, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং আইনগত বৈষম্যের বিষয়গুলি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টেও বারবার উঠে এসেছে।

এই প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রকের বক্তব্যকে নিছক নিয়মরক্ষার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া বলে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের ‘সিলেক্টিভ নৈতিকতা’ বা বাছাই করা নৈতিকতার মুখোশ খুলে দেওয়াই এই বার্তার মূল উদ্দেশ্য। একদিকে নিজের দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ—এই দ্বিচারিতা আর মেনে নিতে রাজি নয় ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান একাধিকবার আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে বলেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন কূটনীতি বিশ্লেষকেরা।

India has rejected Pakistan's claims regarding the torture of minorities in India!

আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ভারতীয়দের টার্গেট করছে হাদির সংগঠন? বড় দাবি জানিয়ে ইউনূস সরকারকে দেওয়া হল ডেডলাইন

সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারত-পাক কূটনৈতিক টানাপড়েন নতুন নয়। তবে সোমবারের এই কড়া প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দিল, শুধুমাত্র অভিযোগ তুলে দায় এড়ানোর রাজনীতি আর চলবে না। নয়াদিল্লির স্পষ্ট বার্তা, নিজেদের অভ্যাস ও বাস্তব পরিস্থিতি না বদলালে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানো কঠিন। সেই ইঙ্গিত দিয়েই ভারতের বিদেশমন্ত্রক আবারও জানিয়ে দিল, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক বিষয় নিয়ে বিদেশি মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।