বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইউক্রেন ইস্যুতে প্রথম থেকেই নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে ভারত। দুতরফের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক থাকায় সরাসরি কোনও দেশের পাশেই দাঁড়ায়নি মোদী সরকার। এমনকি জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটভুটিও প্রতিবার সযত্নে এড়িয়ে চলেছে ভারত। প্রতিবারই বিরত থাকা হয়েছে ভোটদান থেকে। এবার ভারতের এহেন ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ মনোভাবের কড়া নিন্দা করল আমেরিকা।
বুধবারও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে ভারত। এদিনের এই ভোটদানে ১৯৩টি দেশের মধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয় ১৪১টি দেশ। রাশিয়ার সমর্থনে ভোট দেয় মাত্র ৫টি দেশ এবং নিরপেক্ষ অবস্থানে বজায় থাকে ৩৫টি দেশ। এই ৩৫ টি দেশের তালিকায় ছিল ভারতের নামও।
আমেরিকার সহকারী স্টেট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির আইন প্রণেতাদের ভাষণে বলেন, ‘আমরা সবাই চাই ভারত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুক। আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য ভারতকে বারবার আহ্বান করছি। কিন্তু এ পর্যন্ত আমরা কী দেখেছি? প্রতিবারই ভোটদানে বিরত থাকছে ভারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিনে দেখেছি ভারত অন্যান্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতাকে সম্মান করার জন্য সমস্ত দেশকে জাতিসংঘের সনদ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে৷ কিন্তু রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হলেও অবস্থান নিচ্ছে না ভারত।’
এই প্রসঙ্গে জাতিসংঘে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত টি এস তিরুমূর্তির অবশ্য দাবি, ‘ইউক্রেনের দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতি এবং পরবর্তী মানবিক সংকট নিয়ে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তবে আমরা এই বিশ্বাসে অটল আছি যে সমস্যাগুলি আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমেই সমাধান করা যেতে পারে। ভারত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাশিয়া, আমেরিকা এবং ইউক্রেন এই তিনটি দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক ভারতের। দীর্ঘদিন ধরেই দরকারে রাশিয়াকে পাশে পেয়েছে ভারত। একই সঙ্গে আমেরিকার সঙ্গেও সম্প্রতি গভীর হয়েছে বন্ধুত্ব। কিন্তু ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। ফলে ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে চিনা আক্রমণের ভয়কে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অন্যদিকে রাশিয়ার পক্ষে দাঁড়ালে ছেড়ে কথা বলবে না আমেরিকা এবং তার মিত্র রাষ্ট্রগুলি। ফলে এহেন চাপের মধ্যে পড়ে শেষমেষ কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভারতের তরফে সেটাই দেখার।