বাংলা হান্ট ডেস্ক : লোকো ইঞ্জিন উৎপাদনে বারবার বিশ্বরেকর্ড করেছে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (Chittaranjan Locomotive Works) বা সিএলডব্লিউ (CLW)। ভারতীয় রেলের (Indian Railways) অন্যতম ভরসার এই সংস্থা। আর এবার তো বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি সংস্থাকে টেক্কা দিয়ে অত্যাধুনিক রেল ইঞ্জিন তৈরি করে সকলকে চমকেই দিয়েছে। গত মঙ্গলবারই চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কসের তৈরি করা ১২ হাজার হর্সপাওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন রেল ইঞ্জিনটি তার যাত্রা শুরু করেছে। আর তারপর থেকেই নয়া ইঞ্জিন তৈরির জন্য বড় প্রকল্পের ডিমান্ড করছে এই সংস্থা।
উল্লেখ্য, ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে নজির গড়ে ইতিমধ্যেই দু’বার লিমকা বুক অব রেকর্ডসে নাম তুলেছে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস। আর সেই সংস্থার উপরেই ৯ টি ইঞ্জিন তৈরির দায়ভার দেওয়া হয়। বলাই বাহুল্য যে, সাফল্যের সাথেই সেই চ্যালেঞ্জকে মাত দিয়ে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, WAG9 টুইন লোকোমোটিভ এই ইঞ্জিনটি ১০০ থেকে ১২০ কিমি গতিতে ৪৫ থেকে ৫০ টি ওয়াগেন যুক্ত রেককে অনায়াসে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
গর্বের বিষয় হল এই ইঞ্জিনটি তৈরি করা হয়েছে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে। এবং কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ফ্রেট করিডোরগুলির বিষয়কে সামনে রেখেই এই ইঞ্জিনটি তৈরি করা হয়েছে। তারপর থেকেই শ্রমিক সংগঠনের দবি, এবার থেকে ইঞ্জিন তৈরির বরাত যেন চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কসকেই দেওয়া হয়। এতে যেমন কেন্দ্রের টাকা বাঁচবে তেমন CLW-তেও কর্মসংস্থান বাড়বে।
আরও পড়ুন : হারানো TRP ফিরিয়ে আনতে মোক্ষম চাল! স্টার জলসার এই মেগা যা করল ভাবতেও পারবেননা
মঙ্গলবার ইঞ্জিনটির সফল যাত্রার পর CLW-এর জনসংযোগ আধিকারিক অমিত আগরওয়াল বলেন, “আমরা এইরকম ৯ টি সেট তৈরি করব। ইতিমধ্যেই আমাদের শ্রমিক এবং আধিকারিকরা এই ইঞ্জিন প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছেন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই রেল ইঞ্জিন কারখানাটি তৈরি হয় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর। স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নামে নামকরণ করা হয় সংস্থাটির। একটি অর্থবর্ষে ৪৩১ টি ইঞ্জিন নির্মাণের কৃতিত্ব রয়েছে এই রেল কারখানার মুকুটে।
আরও পড়ুন : গেমচেঞ্জার! ঘুমিয়ে আছে বিক্রম-প্রজ্ঞান, তারমধ্যেই ‘চন্দ্রযান ৩’ কে নিয়ে নয়া তথ্য সামনে আনল ইসরো
স্টিম, ডিজেল, ইলেকট্রিক __সব ধরণের ইঞ্জিন তৈরি করার দক্ষতা থাকলেও এখনকার ৯ হাজার এবং ১২ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন সরবরাহের বরাত এই ইঞ্জিন কারখানাকে না দিয়ে একটি বেসরকারি ফরাসি সংস্থাকে দেয় সরকার। আর তাতেই একপ্রকার চটে লাল হয়ে যায় CLW-র কর্মীরা। একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানায়, তারা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে এই মানের ইঞ্জিন তৈরি করে দেখাবে। আর হলও সেটাই।
এইদিন সিটু অনুমোদিত চিত্তরঞ্জন লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত আনন্দের সাথে বলেন, “আমরা সাফল্যের সঙ্গে ১২ হাজার হর্সপাওয়ারের আধুনিক ইঞ্জিন তৈরি করে সেটি চালাতে সক্ষম হয়েছি। আমরাই যখন ইঞ্জিন তৈরি করতে পারছি তখন কেন আর বিদেশ সংস্থার কাছ থেকে এই ইঞ্জিন কেনা হবে? ইতিমধ্যেই আমরা এই বিষয়ে বুধবার প্রতিটি ওয়ার্কশপে ডেপুটেশন দিয়ে স্মারকলিপি জমা করেছি।”