দেশের এমন একটি রেলস্টেশন, যেখানে ট্রেনে চাপতে লাগে না কোন টাকা, লাগে না কোন টিকিট

বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশজুড়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ট্রেনে (Indian Railways) চেপে নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেন। পাশাপাশি, ট্রেনে (Train) সফরের সময়ে যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য দরকার পড়ে টিকিটের। তবে, আজ আমরা বর্তমান প্রতিবেদনে দেশের এমন একটি রেলস্টেশন সম্পর্কে আপনাদের জানাবো যেখানে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজন হয় না কোনো টিকিটের। হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি।

তবে, রেলের তরফে যে এই স্টেশনে বিনামূল্যে যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধা রয়েছে এমনটা কিন্তু নয়, বরং ওই বিভাগের সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজারের উদাসীনতার কারণেই যাত্রীরা রীতিমতো দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি, রেল কর্তৃপক্ষও তার উপার্জন হারাচ্ছে। মূলত, আমরা যে রেলস্টেশনটির প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করছি সেটি হল পূর্ব রেলওয়ের কলকাতার আসানসোল বিভাগের অন্তর্গত ঘোরপারান। এটি বিহারের জামুই জেলায় অবস্থিত। এই স্টেশনটি কবে স্থাপিত হয়েছিল সে সম্পর্কে কারও কাছে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে অন্যান্য স্টেশনের মত সব সুযোগ-সুবিধা এখানে পাওয়া গেলেও শুধু টিকিট কাউন্টারটি নেই। আর এই কারণেই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এমনকি, অনেক সময় অন্য স্টেশনে যাত্রীদের জরিমানার সম্মুখীনও হতে হয়।

জানা গিয়েছে, এই স্টেশনে ০৩৭৬৯ আপ জসিডি-ঝাঝা মেমু এবং ০৩৭৭০ ঝাঝা-জসিডি মেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির স্টপেজ রয়েছে। এছাড়াও এই স্টেশনে একাধিক লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের অঘোষিত স্টপেজও রয়েছে। ঝাঝা-জসিডি রেলওয়ে সেকশনে অবস্থিত এই স্টেশনে যাত্রী সুবিধাও পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে স্টেশনের নাম সহ বোর্ড, স্টেশন অফিস, স্টেশন মাস্টারের উপস্থিতি, পোর্টার, সিগন্যাল রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মী, বাড়ি, স্টার্ট সিগন্যাল, প্যানেল রুম, প্যাসেঞ্জার শেড, চেয়ার ও বেঞ্চ ইত্যাদি।

জরিমানা দিতে হয়: এই প্রসঙ্গে গ্রামবাসী অশোক যাদব জানান, “বিনা টিকিটে ভ্রমণের ফলে বহুবার জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমন ঘটনা আমি ছাড়াও গ্রামের অনেকের সঙ্গেই ঘটেছে। অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগের স্টেশনে ট্রেন থেকে দৌড়ে নেমে টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে আবার ট্রেনে উঠতে হয়। এতে বয়স্ক ও মহিলাদের চরম অসুবিধা হয়।”

18 10 2022 ghorparan railway station2 23148357

টিকিট কাউন্টার খোলার চেষ্টা করা হয়নি: গ্রামবাসীরা জানান, বহুবার টিকিট কাউন্টার খোলার দাবি জানানো হলেও রেল কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগই নেয়নি। এমতাবস্থায়, ঘোরপারান স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রাম কুমার জানান, “লোকাল বা মালবাহী ট্রেনের পাশাপাশি এক্সপ্রেস বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চলাচলের উদ্দেশ্যে স্টেশনটি স্থাপন করা হয়েছে। আপাতত, ঘোরপারান স্টেশনে একটি ট্রেনের স্টপেজ আছে। সেখানে একাধিক রেলকর্মী যথাযথভাবে নিযুক্ত আছেন। টিকিট কাউন্টার না থাকায় যাত্রীরা এই রেলস্টেশন থেকে টিকিট ছাড়াই যাতায়াত করেন।” পাশাপাশি, আসানসোলের ডিআরএম পরমানন্দ শর্মা জানিয়েছেন, “ঘোরপারান রেলস্টেশন যাত্রীদের জন্য নয়। সেখানে একটি ট্রেন থামে যা কর্মীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে। পাশাপাশি, সেখানে থাকা শেড, বেঞ্চ, টেবিলও কর্মীদের জন্যই রয়েছে।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর