বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনাভাইরাস যেন মহামারী আকার ধারণ করেছে। প্রায় সবই বন্ধ। গরীব মানুষের খাদ্যের অভাব হচ্ছে, কী খাবে তাঁরা। তাদের হাতে খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রশাসন। ‘গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্যানিটাইজেশন দফতরের ১৩০০-এর বেশি মানুষকে সাহায্য করলাম। দীর্ঘদিন ধরেই এটা আমার ইচ্ছে ছিল। আজ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ শনিবার বিগ বস খ্যাত অভিনেত্রী হিমাজা (Himaja) অপর বিগ বস খ্যাত আশু রেড্ডির সঙ্গে গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে কর্মীদের দেওয়া সেই সাহায্যের ছবিও তুলে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপরই আবার যে নৈতিক প্রশ্নটা উঠে গিয়েছে, তা হল চরম দুঃসময়ে মানুষকে সাহায্য করা ভালো, কিন্তু সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? এটা কি সত্যিই মানুষকে সাহায্য নাকি নিজের প্রচার? এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করে ছবি পোস্ট করার ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট (Ashok Gehlot)।
এমনকী দেশজুড়ে সেলেবরাও এই প্রতিযোগিতার বাইরে বেরোচ্ছেন না। তাঁদের অনেকেই বাইরে বেরিয়ে সাহায্য করছেন বটে, তাঁদের কারও মুখে মাস্ক আছে, কারও মুখে নেই। কিন্তু সাহায্য দিয়েই ছবি উঠছে পটাপট। অভূক্ত মানুষের সাহায্যের থেকেও বড় হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবির ভিড়। রাজস্থান সরকার তাই মনে করছেন, এই ফ্যাশন এবার বন্ধ হোক। করোনা রোখাটাই এখন দেশের সবচেয়ে জরুরি বিষয়, ছবি তুলে আত্মপ্রচার নয়।
শুধু রাজস্থান (Rajasthan) নয়, সারা দেশজুড়েই এই ছবি চোখে পড়ছে। দেখা যাচ্ছে বাংলাতেও। দিনকয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার এক তরুণী লিখেছিলেন, ‘বাবার কারখানা বন্ধ। খাওয়া জুটছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবার ছবি দেখলাম। বাবা মাথা নিচু করে চাল, ডাল নিচ্ছে। জীবনে প্রথমবার…’ সেই পোস্টের পর সমালোচনা শুরু হলেও বদলায়নি কিছুই। সাহায্যের নামে আত্মপ্রচারের চেষ্টা চলছে প্রতি মুহূর্তে।
রাজস্থান সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, খাদ্যদ্রব্য দেওয়া বা যে কোনও প্রয়োজনে আর্ত মানুষকে সাহায্য করলে তার কোনও ছবি তোলা বা শেয়ার করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট জানিয়েছেন, এই সময় মানুষকে সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব, ছবি তুলে নিজের প্রচারের প্রতিযোগিতার বিষয় নয়।