বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর (Biswajeet Basu) এজলাসে শিক্ষক নিয়োগ মামলার এক শুনানি ছিল। সেখানেই নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ওপর ক্ষুব্ধ বিচারপতি। চাকরি কারও ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ নয়। আন্দোলন করলেই কি চাকরি পাওয়া যায়! নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পাওয়া এক এক শিক্ষিকার চাকরি নিয়ে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুললেন বিচারপতি।
কেন উঠে এল পার্থ প্রসঙ্গ? প্রসঙ্গত, আদালতে দাঁড়িয়ে এক শিক্ষিকা দোষ স্বীকার করে বলেছিলেন পার্থর কথাতেই ওনার চাকরি হয়েছিল। পাশাপাশি শিক্ষিকার অনিয়ম করে চাকরি পাওয়ার বিষয়টি মেনে নেয় এসএসসিও। এই ঘটনা সামনে আসতেই কমিশনকে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওই শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি বসু।
ঘটনাটা ঠিক কী? জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে প্রিয়ঙ্কা দত্ত সমাদ্দার নামে এক মহিলা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তার অভিযোগ ছিল, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধাতালিকার ওয়েটিং লিস্টে উপরের দিকে নাম ছিল তার, তালিকায় ৩৩ নম্বরে। কিন্তু তারপরও চাকরি পাননি তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, সেই একই তালিকার ৫৩ নম্বরে থাকা সরমা ঘোষ পরবর্তীতে চাকরি পেলেও চাকরি পাননি তিনি।
কমিশন দ্বারা সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল সরমাকে। সময়টা ছিল ২০২০। সেই বছরই মার্চ মাসে তাকে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। চাকরিপ্রার্থী প্রিয়াঙ্কার দাবি সেইসময় চাকরির আন্দোলন ও অবস্থান বিক্ষোভের প্রথম সারিতে ছিলেন ওই সরমা ঘোষ। সেই সময় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী কয়েকজন আন্দোলনকারীদের ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তাদের মধ্যে সরমা ছিলেন একজন। অভিযোগ পার্থ সাক্ষাতের পরই চাকরি মেলে সরমার।
পরে হাইকোর্টে এই মামলা উঠলে আদালতের সামনে সমস্ত সত্যিটা স্বীকার করে নেন সেই সরমা। তিনি জানান, পার্থবাবুর সুপারিশেই চাকরি হয়েছিল তার। এদিন নিয়োগ দুর্নীতির এক মামলায় আদালতে ফের একথা জানান সরমা। এতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি বসু। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিশানা করে তার মন্তব্য, ‘চাকরি কি কারও পৈতৃক সম্পত্তি! আন্দোলন করলেই কি চাকরি পাওয়া যায়!’