বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ গোটা দেশজুড়ে পালন করা হচ্ছে জন্মাষ্টমী উৎসব। সেই প্রসঙ্গে টুইটার থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে শুভেচ্ছা বার্তা। তবে এর মাঝে একটি বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে গোটা দিন জুড়ে অব্যাহত রাজনৈতিক বিতর্ক। দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুতকারক সংস্থা আমূলের বিজ্ঞাপনকে ঘিরে শোরগোল পড়েছে গোটা বাংলায়। জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ওই বিজ্ঞাপনটিতে লেখা হয়, ‘কেষ্টা বেটাই চোর’; রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের পাশাপাশি কেষ্টা বলতে অনুব্রত মণ্ডলের নামও বোঝানো হয়েছে। যদিও এ অভিযোগটি মানতে নারাজ উক্ত সংস্থা কর্তৃপক্ষ আর এবার এ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির সন্দেহ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সম্পত্তির খোঁজও পেয়েছে তারা। এর মাঝেই আবার বিরোধী দলগুলির তরফ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতার লাইন ক্রমশ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, “কেষ্টা বেটাই চোর”। উল্লেখ্য, এই লাইনটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পুরাতন ভৃত্য’ কবিতা থেকে নেওয়া আর এদিন জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষ্যে আমুল সংস্থার বিজ্ঞাপনে একই লাইন ব্যবহার করা কি কেবলমাত্র বিজ্ঞাপনে চমক নাকি এর পিছনে রাজনৈতিক প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে, তা কেন্দ্র করে উঠে গিয়েছে প্রশ্ন চিহ্ন।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল গোটা বাংলায় ‘কেষ্ট’ নামে পরিচিত। ফলে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কেষ্টা বলতে আদতে যে তাঁকেই বোঝানো হয়েছে, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেছে একটি মহল। যদিও সংস্থার দাবি, এটি নিছক মজা। তবে এদিন এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “মাখন তৈরির গুজরাটি একটি সংস্থা বিজ্ঞাপনটি দিয়েছে। ফলে গুজরাটের মতো রাজ্যে যে ধরনের রাজনীতি করা হচ্ছে, তার মধ্যে যদি কোনও সংস্থা প্রবেশ করে, তবে তা অনুচিত। তবে আমার মনে হয়, বিজ্ঞাপনটি ব্যবহার করার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাজকে বিকৃত করা হয়েছে। তাদের রবীন্দ্রনাথ কিংবা বাংলা প্রসঙ্গে কোনো রকম ধারণা নেই, অথচ তাঁর ‘পুরাতন ভৃত্য’ কবিতা থেকে একটি লাইন ব্যবহারের মাধ্যমে কটাক্ষ করা হয়েছে। এভাবে কোন লাইন ব্যবহার করা অনুচিত।”
তিনি আরো বলেন, “পুরাতন ভৃত্য কবিতায় যার প্রসঙ্গে এই লাইনটি ব্যবহার করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সেই চরিত্রটি সমালোচিত হওয়ার পাশাপাশি নিন্দিত হয়। বিপদের দিনে, অন্যের বিপদে এবং চরম অসুস্থতার দিনে সে তার আনুগত্যের প্রমাণ দিয়ে চলে। ফলে কবিতার চরিত্র নিয়ে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তার নিন্দা করি। এটি অত্যন্ত সস্তা মানসিকতা। এই লাইনটি শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে করা হয়ে থাকলে অসুবিধা নেই, তবে যদি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে বলা দরকার যে, চরিত্রটির আনুগত্যও বলা উচিত। কারণ, রবীন্দ্রনাথের কবিতার যে লাইনটি ব্যবহার করা হয়েছে, তার পরেরটি ছিল, যত পায় বেত না পায় বেতন তবু না চেতন মানে।”