সরকারি চাকরি ছেড়ে শুরু করেছিলেন ডালিমের বাগান! এখন বছরে ১৬ লক্ষ টাকা রোজগার কমলেশের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কিছু কিছু মানুষের সফলতার কাহিনি এমন হয় যা চমকে দেয় সবাইকে। পেশাগত ভাবে সফল হয়ে শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছেপূরণের জন্য চাকরিকে প্রত্যাখ্যান করেও যে সফলতা অর্জন করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছেন কমলেশ।

গুজরাটের ঝালাওয়ার জেলার বাসিন্দা কমলেশ ডোবরিয়া সরকারি চাকরি করতেন। বেতনও ভালো ছিল তাঁর। ছুটির দিনে প্রায়ই গ্রামে যেতেন তিনি। সেখানে কৃষকদের সাথেও দেখা হত তাঁর। এভাবেই ধীরে ধীরে কৃষিতে আগ্রহ বাড়তে কমলেশের। শুধু তাই নয়, তারপর রীতিমতো চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজেই নাম লিখিয়ে ফেলেন তিনি!

   

বর্তমানে তিনি তাঁর ১৬ বিঘা জমিতে ডালিম চাষ করছেন। চার হাজারেরও বেশি গাছপালা রয়েছে সেখানে। শুধু তাই নয়, এখন তিনি বছরে ১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন এর মাধ্যমেই।

কমলেশ একজন কৃষক পরিবারের সন্তান। কিন্তু তিনি প্রথমে কৃষি কাজে আগ্রহী ছিলেন না। পড়াশোনায় অত্যন্ত মনযোগী কমলেশ ইলেকট্রনিক্সে স্নাতকোত্তর শেষ করে সরকারি চাকরি পান। তিনি ১৯৯১ সালে জুনিয়র টেলিকম অফিসার হিসেবে চাকরি শুরু করেন।

এই প্রসঙ্গে কমলেশ জানিয়েছেন যে, “আমি কখনও চাষ করিনি। কিন্তু যখনই গ্রামে যেতাম, কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতাম। তাঁদের কথা শোনার পাশাপাশি, বিভিন্ন ফসলের তথ্যও সংগ্রহ করতাম। এভাবেই ধীরে ধীরে কৃষিতে আমার আগ্রহ বাড়তে থাকে।”

কমলেশ আরও জানিয়েছেন যে, “১৯৯৮ সালে আমি আমার অবসর সময়ে কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। চাষাবাদের জন্য খুব বেশি জমি না থাকায় প্রথমে জমি কেনার দরকার ছিল। আমার জমানো টাকা এবং আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে প্রথমে ২০ বিঘা জমি কিনি।”

WhatsApp Image 2022 02 01 at 1.37.14 PM

এরপর কমলেশ চাষ শুরু করেন এবং বাকি কৃষকদের মত প্রথাগত ভাবে তুলো এবং রেড়ির মতো ফসল ফলাতেন। তবে, চাকরির কারণে তিনি এতে বেশি সময় দিতে পারছিলেন না। যে কারণে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েই পুরোদমে এই কাজ শুরু করেন।

এরপর তিনি একজন কৃষকের কাছ থেকে জৈব চাষ সম্পর্কে জানতে পেরে ওই পদ্ধতিতেই চাষ শুরু করেন। পাশাপাশি, কিছু গরু কিনে তাদের গোবর থেকে সার তৈরি করে চাষের কাজে তা লাগাতে থাকেন। এর ফলে খরচ কমার পাশাপাশি জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়।

ধীরে ধীরে কমলেশ ড্রিপ সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২০১৮ সালে ডালিম বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন। একেবারে প্রথম দিকে কমলেশ ২ হাজার ডালিমের চারা রোপন করেন এবং পরে আরও ২৬০০ গাছ লাগান। শুধুমাত্র এই চাষ করেই গত বছর কমলেশ ১৬ লক্ষ টাকা লাভ করেছেন। বর্তমানে তিনি ডালিমের পাশাপাশি পেয়ারা, কাগজি লেবু দিয়েও বাগান তৈরি করছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর