বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সরকার দ্বারা এক নব প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগের কথা জানা গেলেই তার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করে চলেছে প্রশাসন। সাম্প্রতিককালে, উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গায় বুলডোজার দিয়ে ঘর বাড়ি ভেঙে চুরমার করতে দেখা গিয়েছে যোগী প্রশাসনকে। আর এবার উত্তরপ্রদেশের ন্যায় একই রকম দৃশ্য দেখা গেল অপর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশে।
বেশ কয়েকদিন আগে এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান আর এবার তা কাজে করে দেখালেন তিনি। গত শনিবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে মালবীয় নগরে এক মহিলাকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে তিন যুবক। এরপরে মহিলাটির দ্বারা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তাকে উল্টে ব্লেড দিয়ে হামলা করে অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় 118 টি সেলাই পর্যন্ত করতে হয় নির্যাতিতার শরীরে। আর এই ঘটনাটি সামনে উঠে আসার পরেই প্রশাসনের তরফ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়, যেখানে অভিযুক্তদের বাড়ি ভেঙে দেওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, “ব্লেড দিয়ে হামলার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল সরকার। অভিযুক্তদের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল।”
যদিও মধ্যপ্রদেশের পূর্বে উত্তরপ্রদেশের একাধিক স্থানে এহেন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে মানুষ, যেখানে ধর্ষণ থেকে শুরু করে অন্যান্য গুরুতর মামলায় দুষ্কৃতীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। সম্প্রতি, প্রাক্তন বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার পয়গম্বর ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্যের ফলে উত্তরপ্রদেশে একাধিক প্রান্তে বিক্ষোভে সামিল হয় মানুষ। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়ার খবর সামনে উঠে আসে। গতকাল প্রয়াগরাজেও একই রকমের ঘটনা ঘটে বলে দাবি। যদিও পরবর্তীকালে সরকার দ্বারা বলা হয়, “ওই বাড়িটি বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছিল বলেই ভাঙা হয়েছে। এর সঙ্গে পয়গম্বর বিতর্কের কোন যোগসূত্র নেই।”
তবে সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে এই ঘটনায় প্রশাসনের কার্যপদ্ধতির উপর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, যদি কোন অপরাধী দোষ করে থাকে, তাহলে তাকে শাস্তি দিতে পারে একমাত্র আদালত। কিন্তু আদালতের বিচারের পূর্বেই সরকার কিভাবে শাস্তি দিতে পারে এবং এটি আদৌ সংবিধানে অনুমতি পায় কিনা, সেই বিষয়টি সামনে রেখে বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে অনেকে।