পা দিয়ে লিখেই অসাধ্যসাধন! পুরুলিয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী খেরোয়ালের কীর্তিতে মুগ্ধ সকলেই

বাংলাহান্ট ডেস্ক : শরীরের দুটি হাতের সবকটা আঙুল বাঁকা। সব সময় ঝুলে থাকে ডান হাত। আর পাঁচটা সাধারন মানুষের মতো হাত নয়। ঠিকমতো নাড়ানো যায় না দুটি হাতই। ভরসা বলতে দুটি পা। সেই পায়ের উপর ভরসা করেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন খেরোয়াল হেমব্রম। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির আড়শা ব্লকের সিরকাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবনিতে বাস খেরোয়ালের।

তার পরীক্ষা দেওয়ার ছবি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাঁ পায়ের সাহায্যে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছেন খেরোয়াল। খেরোয়ালের এই প্রচণ্ড মানসিক শক্তিকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন বাংলার মানুষ। বাম পায়ের সাহায্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে এখন ভালো ফল করাই লক্ষ্য পুরুলিয়ার এই ছাত্রের।

আরোও পড়ুন : সাম্প্রদায়িকতা ছাড়ানো লক্ষ্য! উস্কানি দিয়ে গ্রেফতার মৌলানা, গুরুতর অভিযোগ আজাহারের বিরুদ্ধে

খেরোয়ালের এই পরীক্ষা দেওয়া দেখে অভিভূত অভিভাবক থেকে পরীক্ষক সবাই। এই আদিবাসী প্রতিবন্ধী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর এভাবে পায়ের সাহায্যে লেখাটাও কিন্তু মোটেও সহজ কাজ নয়। গোটা শরীর বেঁকিয়ে বসেই লিখতে হচ্ছে তাকে। মুখও বাঁকা এই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। খেরোয়ালের সাথে যেন এক অসম লড়াই চলছে পরীক্ষা কেন্দ্রে। তবুও নিজের লক্ষ্যে অবিচল সে।

আরোও পড়ুন : ‘চড়াম চড়াম’, ‘ওদের পিঠে ডিজে বাজাবো’ লোকসভার আগে কুণালের মুখে কেষ্টর কু কথার ‘বাণী’

ঠিক করে কথাও বলতে পারেনা সিরকাবাদ হাইস্কুলের ছাত্র খেরোয়াল। আড়শা ব্লকের রাঙামাটি স্বামী শ্রদ্ধানন্দ বিদ্যাপীঠে পরীক্ষার সিট পড়েছে তার।আড়শা ব্লকের রাঙামাটি স্বামী শ্রদ্ধানন্দ বিদ্যাপীঠ এই পরীক্ষার্থীর বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্কুল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় স্কুল হোস্টেলে আপাতত রাখা হয়েছে তাকে। হোস্টেলে থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে। পরিবার সূত্রে খবর, জন্মের পর জন্ডিসে আক্রান্ত হয় খেরোয়াল। 

purulia school

যখন চিকিৎসা চলছিল তখনই তার হাতের আঙুল, মুখ বেঁকে যেতে শুরু করে। পরে অন্য রাজ্যেও যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। তবে লাভ হয়নি কিছু। পুরুলিয়ার ডিস্ট্রিক্ট নোডাল অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য কুনাল সেন জানাচ্ছেন, ‘ওই ছাত্রের ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ জানাতেই হবে।’ ছাত্রটির বাবা অজিত হেমব্রমের কথায়, ‘‌শারীরিক প্ৰতিবন্ধকতার পরেও ছেলের ইচ্ছাশক্তির কথা ভেবে ওর লেখাপড়ার জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’‌

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর