বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সর্বত্রই চাকরির একটি আকাল পরিলক্ষিত হচ্ছে। পাশাপাশি, করোনার মত ভয়াবহ মহামারীর পরে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গতানুগতিক ভাবে চাকরির পথে না হেঁটে অনেকেই বিভিন্ন নিত্যনতুন রোজগারের উপায় অবলম্বন করছেন। যেগুলি সঠিকভাবে করার ফলে হচ্ছে তুমুল লাভও। শুধু তাই নয়, এর ফলে গ্রামীণ মহিলারাও হয়ে উঠছেন স্বনির্ভর। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা বাক্স পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষের (Box Crab Farming) প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করব।
প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, ইতিমধ্যেই এই চাষ যুবক-যুবতীদের বিকল্প উপার্জনের পথ দেখাচ্ছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পুকুরেই মাছ চাষের পাশাপাশি বাক্স পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ খুব সহজেই করা সম্ভব। যার ফলে আরও বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় মৎস্যচাষিদের। ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যেও এই ভাবে কাঁকড়া চাষ শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম এক ব্লকের মৎস্যচাষিরা পুকুরেই মাছ চাষের পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ করছেন। এমনকি, এই অভিনব পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে কাঁকড়া চাষের প্রচলন সমগ্ৰ রাজ্যের মধ্যে নন্দীগ্রামেই প্রথম পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি, সমগ্ৰ বিষয়টিকে সঠিকভাবে বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই ওই ব্লকে মৎস্য বিভাগের তৎপরতায় কাঁকড়া চাষিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে “বক্স-ক্রাব ফিশ প্রোডাকশান গ্রুপ”-ও।
বক্স ক্রাব টেকনোলজিটি ঠিক কি? এই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম- ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানিয়েছেন কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে আধুনিক লাভজনক পদ্ধতির নাম হল “বক্স ক্রাব টেকনোলজি”। পাশাপাশি, এটিকে “বাক্স পদ্ধতি” হিসেবেও বিবেচিত করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সামান্য নোনা জল রয়েছে এমন পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি বাক্সের সাহায্যে সহজেই কাঁকড়া চাষ করা যায়।
মূলত, এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে পুরুষ কাঁকড়া এবং ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে স্ত্রী কাকঁড়া চাষ করা যায়। এমতাবস্থায়, বাজারে কাঁকড়ার চাহিদা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এটি অত্যন্ত লাভজনক চাষও বটে। আর সেই কারণেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে কাঁকড়া চাষের হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই সেখনাকার স্থানীয় কাঁকড়া চাষীরাও এই চাষের মাধ্যমে ভালো লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি, তাঁদের যথাযথভাবে সাহায্য করছে ব্লক মৎস্য দপ্তর।