“মোদী ও ভারতীয়দের কাছে ক্ষমা চান”, সরব হলেন মালদ্বীপের বিরোধী নেতা, বিরাট চাপে মুইজ্জু

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) সাথে বিরোধের আবহ তৈরি করে এবার বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন মালদ্বীপের (Maldives) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু (Mohamed Muizzu)। এমনকি, বর্তমানে তিনি নিজের দেশের বিরোধী দলগুলির সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ভারত বিরোধী নীতির আবহে মালদ্বীপের প্রধান বিরোধী দল এমডিপি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমতাবস্থায়, মালদ্বীপের জুমহুরি পার্টির (জেপি) নেতা কাসিম ইব্রাহিম জানিয়েছেন যে, মুইজ্জুর উচিত প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতের কাছে ক্ষমা চাওয়া।

এই প্রসঙ্গে কাসিম ইব্রাহিম স্পষ্টভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, “আমাদের প্রতিবেশী দেশ (ভারত) সম্পর্কে এমনভাবে কথা বলা উচিত নয় যা দুই দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। আমাদের দেশের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে। যা আমাদের বিবেচনা করা উচিত। প্রেসিডেন্ট সোলিহ (মালদ্বীপের পূর্ব রাষ্ট্রপতি) এই দায়িত্ব বিবেচনা করে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করেছিলেন। আমি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে তাঁর চিন সফরের পর করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার সহ প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতীয়দের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলছি।” মালদ্বীপের স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটির প্রধান বিরোধী দল এমডিপি-র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ওই দলের সাংসদরা জানান, “আমরা এবং ডেমোক্র্যাটরা মিলে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বাক্ষর রেখেছি। দ্রুত তা সংসদে পেশ করা হবে।”

Maldivian opposition leader asked Muizzu to apologize to Modi and Indians

পাশাপাশি, কয়েকদিন আগে বিরোধী দলের একাধিক নেতা একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন। বিরোধী নেতারা জানান, “দেশের সরকারের উচিত মালদ্বীপের জনগণের সুবিধার জন্য উন্নয়নের সহযোগীদের সাথে কাজ করা। মালদ্বীপ ঐতিহ্যগতভাবে এখনও পর্যন্ত এটাই করেছে। ভারত মহাসাগরের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা মালদ্বীপের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

আরও পড়ুন: মেজাজের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত, অর্থনীতিতে উঠছে ঝড়! উল্টোদিকে ইউরোপের গ্রোথ পৌঁছল “Zero”-তে

কীভাবে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ল: জানিয়ে রাখি, লাক্ষাদ্বীপ সফরের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই ভ্রমণকে মালদ্বীপের মতো বলে বর্ণনা করেছিলেন। পাশাপাশি, ওই দ্বীপের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতীয় পর্যটকদের লাক্ষাদ্বীপে ভ্রমণের জন্যও আবেদন করেছিলেন। এই টুইটের পর মালদ্বীপে তোলপাড় শুরু হয়। সেখানকার মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর টুইটের বিরোধিতা করেন। এরপরই ভারতীয়রা সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়কট মালদ্বীপের হ্যাশট্যাগ শুরু করেন। তবে মোদীর বিরোধিতা করার জন্য মালদ্বীপের মন্ত্রীদের তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াও হয়েছিল।

আরও পড়ুন: রতন টাটার প্রিয় কোম্পানি তুলল ঝড়! ২৫৫ মিনিটেই কামিয়ে ফেলল ১৫,০০০ কোটি টাকা

উল্লেখ্য যে, মালদ্বীপ বরাবরই ভারতের বন্ধু। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে রাষ্ট্রপতি হওয়া মোহাম্মদ মুইজ্জুর নীতির কারণে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। মুইজ্জুকে বরাবরই ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। নির্বাচনের সময়ও তিনি “ইন্ডিয়া আউট” স্লোগান দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, গত ১৩ জানুয়ারি চিন সফরের শেষে তিনি বলেন, “চিন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমাদের দেশ ছোট, তার মানে এই নয় যে কেউ আমাদের হুমকি দেওয়ার লাইসেন্স পেয়েছে।” এইভাবেই তিনি পরোক্ষভাবে ভারতকে টার্গেট করেন। এর পাশাপাশি, গত ১৪ জানুয়ারি মালদ্বীপে হওয়া কোর কমিটির বৈঠকের পরে মুইজ্জু সরকার সেখানে স্থিত ৮৮ জন ভারতীয় সেনাকে প্রত্যাহার করার জন্য ভারতকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর