বাংলাহান্ট ডেস্ক : মায়ানমারের (Mayanmar) ‘আরাকান আর্মি’র (Arakan Army) দখলে চলে গেল মংডো (Maungdaw) শহরের শেষ সেনাঘাঁটি। মঙ্গলবার মায়ানমারের এই সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী সেনাঘাঁটি দখলের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। আরাকান বাহিনী মংডো শহর অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি দখল করেছে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সাথে থাকা ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তও।
মায়ানমারের (Mayanmar) বর্তমান অবস্থা
এই সেনাঘাঁটি দখলের মাধ্যমে মায়ানমারের (Mayanmar) সবচেয়ে শক্তিশালী জনজাতি বাহিনীটি নিজেদের কর্তৃত্বে আনল বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সম্পূর্ণ এলাকা। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা জানিয়েছেন, সেনাঘাঁটি দখলের সময় বন্দি করা হয়েছে ঘাঁটির কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে।
এছাড়াও নাফ নদীর উপর যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদী পথে নৌকা করে জুন্টা সরকারের পুলিশ ও মুসলিমরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে ছাত্রনেতা ত্বোয়ান মারত নাইং-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় আরাকান আর্মি। এটি মূলত রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি সশস্ত্র বাহিনী। ২০০৯ সালে রাখাইন প্রদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই বাহিনী আক্রমণ চালায় ৪টি থানায়।
আরোও পড়ুন : বরফ গলার ইঙ্গিত! অবশেষে রাজ্যের নীল-সাদাকেই মান্যতা দিল কেন্দ্র
মায়ানমারের (Mayanmar) তৎকালীন গণতন্ত্রকামী নেত্রী সু চির সরকার সেই সময় সেনাকে নির্দেশ দেন আরাকান আর্মিকে ধ্বংস করে দেওয়ার। যদিও পরবর্তীকালে বন্ধ হয়ে দুপক্ষের সংঘাত। সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে ২০২১ সালে উৎখাত করে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেদেশের সেনা। তারপর থেকে মায়ানমারের সেনা সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্রে নামে বিরোধী শক্তিগুলি।
মায়ানমারের জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে গত বছর থেকে সম্মুখ সমরে নামে মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়্যান্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’। তারপর থেকে গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রে পরিণত হয় রাখাইন। যুদ্ধের ফলে দেশের অধিকাংশ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনা। এবার মংডো দখলের পর তাই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি আবার এক দেশের সরকার পতনের মুখে?