বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের তুঙ্গে রাজনীতি! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) চোট নিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক টানাপোড়েন। রাজ্যে নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়লেই কেন পায়ে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী? একসুরে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। মমতার চোট নিয়ে তোপ দেগেছেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) থেকে মহম্মদ সেলিম (Md. salim)।
জলপাইগুড়ি থেকে ফেরার পথে দুর্যোগের কবলে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। জরুরি অবতরণের সময় পা ও কোমরে চোট পান মমতা (Mamata Banerjee)। কলকাতায় ফিরে নিজের গাড়িতে চেপেই সোজা চলে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। হাসপাতালে ঢোকার পথে হুইলচেয়ার না নিলেও তাঁকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। তাঁর হাঁটার কষ্ট পরিষ্কার পড়েছে ক্যামেরায়। তাঁর চোট কতখানি গুরুতর, তা জানতে বেশ কিছু পরীক্ষা করে দেখছেন চিকিৎসকরা। তবে মমতার চোট নিয়ে খোঁচা দিতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধী নেতারা।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, ‘ভোট এলেই কেন বারবার পায়ে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী? বারবার পায়ে চোট মানেই শুভ লক্ষণ নয়,’ এরপরই যোগ করেন, ‘সবথেকে বড় চোট কোথায় জানেন, তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর রক্তচাপ বাড়ার কথা ছিল।’ তবে মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেন সুকান্ত। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের গলাতেও একই সুর। বলেন, ‘মাটিতে পা রেখে চলতে শিখুন। নির্বাচনের আগে দুর্ঘটনা কেন হয়?’
এর আগে একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে পা ভেঙেছিল মুখ্যমন্ত্রীর। ২০২১-এর ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে আহত হন তিনি। সে সময় চোটের জন্য বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তিনি। এরপর পায়ে প্লাস্টার নিয়ে হুইলচেয়ারে বসেই রাজ্যজুড়ে নির্বাচনী প্রচার চালান মমতা। বিরোধীদের উদ্দেশে সেসময় হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘ভাঙা পায়ে খেলা হবে।’ এবার উত্তরবঙ্গে প্রচারে গিয়ে চোট পাওয়ায় সেই স্মৃতিই ফিরল বঙ্গ রাজনীতিতে।
কী হয়েছিল ঘটনা? মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ির মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রীর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারসভা ছিল। সভা শেষ করে জলপাইগুড়ির ক্রান্তি থেকে বাগডোগরার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সাংবাদিক বিশ্ব মজুমদার এবং মুখ্যমন্ত্রীর দেহরক্ষী স্বরূপ গোস্বামী। মাঝপথে আকাশ কালো করে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। তিন দিকের আকাশ কালো করে আসে। পাইলট বোঝেন এগোনো ঠিক হবে না।
নীচে বৈকণ্ঠপুরের ঘন জঙ্গল থাকায় তিনি তখনই কপ্টার নামাতে পারেননি। বাগডোগরার দিকে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। অগত্যা তিনি গতিমুখ পরিবর্তন করে উড়তে থাকেন শিলিগুড়ির দিকে। শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে শালুগাড়ার কাছে সেবক এয়ারবেসে জরুরি অবতরণ করে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার।