বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা আমাদের দেশের (India) কিংবা বিশ্বের প্রথমসারির ধনী ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রায়শই শুনে থাকি। পাশাপাশি, তাঁদের অধিকাংশজনের নামও অনেকেই জানেন। মূলত, সেইসব ধনকুবেরদের মধ্যে বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন একজন কৃষকও কোটিপতি হতে পারেন? এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে ভারতের কয়েকজন কোটিপতি কৃষকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যাঁদের সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কিন্তু, তাঁরা কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে সফলতার অনন্য নজির গড়ে তুলেছেন। চলুন, জেনে নিই তাঁদের প্রসঙ্গে।
১. রামশরণ ভার্মা: প্রথমেই আমরা যাঁর সম্পর্কে জানাবো তিনি হলেন ভারতের অন্যতম ধনী কৃষক রামশরণ ভার্মা। তিনি উত্তরপ্রদেশের দৌলতপুরের বাসিন্দা। রামশরণ ১৯৯০ সালে মাত্র ৫ একর জমি নিয়ে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর ২০০ একর জমি রয়েছে। ২০১৯ সালে, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত হন। রামশরণ ভার্মা বেশিরভাগ সবজি চাষ করেন। তাঁর বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ হল ২ কোটি টাকা।
২. রমেশ চৌধুরী: জয়পুরের রমেশ চৌধুরী ভারতের দ্বিতীয় ধনী কৃষক হিসেবে বিবেচিত হন। তাঁর তিনটি পলিহাউস ও একটি গ্রিনহাউস রয়েছে। ওই পলিহাউসগুলিতে টমেটো এবং শসার চাষ হয় এবং গ্রিনহাউসে চাষ করা হয় ফুল। এছাড়াও, তিনি ক্ষেতে ভুট্টা চাষ করেন। তাঁর বার্ষিক আয়ের পরিমাণ হল প্রায় ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: করতে গিয়েছিলেন তীর্থযাত্রা! ২৪ লাখের প্রতারণার সম্মুখীন বাংলার ৪০ জন হজযাত্রী
৩. প্রমোদ গৌতম: উল্লেখ্য যে, প্রমোদ গৌতম একজন ইঞ্জিনিয়ার হলেও তাঁর কৃষিকাজে খুব আগ্রহ ছিল। তাই, তিনি ২০০৬ সালে চাকরি ছেড়ে চাষ শুরু করেন। প্রমোদ প্রথমে চিনাবাদাম ও হলুদ চাষ করলেও তাতে লোকসানের সম্মুখীন হন। এরপর তিনি কমলালেবু, আঙুর, কলা, লেবু, পেয়ারার মতো ফল চাষ শুরু করেন। আর এর মাধ্যমেই তিনি লাভবান হন। এছাড়াও, প্রমোদ গৌতম বিভিন্ন ফসলের চাষও করেছেন। তিনি একটি ডাল মিল তৈরি করেছিলেন। যেখানে ডাল প্রসেসিং এবং পালিশ করা হয়। বর্তমানে প্রমোদ গৌতম একজন সফল কৃষক। তাঁর ২৬ একরেরও বেশি জমি রয়েছে এবং প্রতি বছর তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন।
আরও পড়ুন: আরও কোণঠাসা হবে চিন! একদম নাকের ডগায় মেগাপ্ল্যান্টের পরিকল্পনা টাটা গ্রুপের, ঘুম উড়ল বেজিংয়ের
৪. শচীন কালে: শচীন কালে হলেন ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা। ভারতের ধনী কৃষকদের মধ্যে তিনি চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। প্রথমে তিনি চাকরি করলেও ২০১৪ সালে চাকরি ছেড়ে কোম্পানি গঠন করেন। ওই কোম্পানির নাম হল ইনোভেটিভ এগ্রিলাইফ সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড। কোম্পানিটি চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের একত্র করে। শচীন কালে হলেন ওই কোম্পানির মালিক। তিনি এই কোম্পানির মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয় করছেন। তাঁর বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ২.৫ কোটি টাকা।
৫. হরিশ ধনদেব: রাজস্থানের বাসিন্দা হরিশ ধনদেব কৃষিকাজে অত্যন্ত সফল হয়েছেন। ইনিও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করেন। সবার আগে তিনি ঘৃতকুমারী চাষ করেন। তারপর জেল, সাবান এবং অন্যান্য পণ্য তৈরির জন্য অ্যালোভেরা প্রসেস শুরু করেন। এখন তিনি প্রায় ১০০ একর জমিতে অ্যালোভেরা চাষ করেছেন এবং তাঁর বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ২ কোটি টাকা।