না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন মা, জন্মদাত্রীর জন্য স্বর্গে চিঠি লিখল ছোট্ট মেয়ে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: “যারা যুদ্ধে যায়, তারা যুদ্ধ চায় না। যারা যুদ্ধ চায়, তারা যুদ্ধে যায় না।” এই আপ্তবাক্যটি যে চরম সত্যতায় পরিপূর্ণ তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পেয়েছি বর্তমানে চলা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মাঝে চলা যুদ্ধে। অস্ত্রের গর্জনে প্রতিটি যুদ্ধেই প্রাণ হারান সাধারণ মানুষেরা। আর সেখানেই কেউ হন পিতৃহারা, কেউ হারান মাকে, কেউ হারান সন্তান এবার কেউ কেউ হন সঙ্গী হারাও। অর্থাৎ, যুদ্ধ যে সর্বগ্রাসী একটি পন্থা তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা।

সম্প্রতি, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে মাতৃহারা একটি ছোট্ট মেয়ের মায়ের উদ্দেশ্যে লেখা এক মর্মস্পর্শী চিঠি কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যুদ্ধের ভয়াবহতা। আর এই ঘটনা সামনে আসার পরই রীতিমত চোখ ভিজে গিয়েছে সকলের। জানা গিয়েছে যে, ইউক্রেনের ছোট্ট মেয়ে গালিয়া, মাকে হারিয়েছে যুদ্ধে। ইউক্রেনে রুশ সেনাদের হামলায় নিহত মায়ের উদ্দেশ্যেই ছোট্ট গালিয়া একটি চিঠি লিখেছে।

চিঠিতে গালিয়া তাঁর মায়ের উদ্দেশ্যে লিখেছে, “মা! তুমি সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সেরা মা। আমি কখনো তোমাকে ভুলব না। আমি আশা করি, তুমি স্বর্গে গিয়ে সেখানে সুখী হবে। আমিও ভালো মানুষ হতে এবং স্বর্গে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। স্বর্গে গিয়ে তোমার সঙ্গে দেখা হবে! তোমাকে চুম্বন। ইতি গালিয়া।” যুদ্ধের ফলে মাতৃহারা গালিয়া এভাবেই নিজের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে তার মায়ের কাছে।

এদিকে, এই মর্মস্পর্শী চিঠির একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা আন্তন গেরাশচেঙ্কো। এছাড়াও, তিনি টুইটারে গালিয়ার চিঠিটির ইংরেজি অনুবাদ করে লিখেছেন, মায়ের কাছে ৯ বছরের এক মেয়ের চিঠি। তার মা মারা গিয়েছেন রুশ সেনার হামলায়।

এদিকে, স্বাভাবিকভাবেই ওই চিঠি পড়ে সকলেই আবেগাপ্লুত হয়েছেন। পাশাপাশি, টুইটারে কমেন্টের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন তাঁরা। সকলেই মানুষের ফলে সৃষ্ট এই সব যুদ্ধের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। যুদ্ধের ফলে স্বাভাবিক জনজীবনেই যে বিরাট সঙ্কট নেমে আসে তারও অবতারণা করেন অনেকেই।

russia ukraine war v

এই প্রসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমি এই মুহূর্তে গালিয়ার কষ্ট অনুভব করছি। মাকে হারানোর সময় সে কতটা কষ্ট অনুভব করেছিল, তা-ও অনুমান করতে পারছি। প্রত্যেক সন্তানের কাছে মা-ই সব। এক কথায়, গালিয়ার লেখা এই চিঠি যেন সমস্ত যুদ্ধের ভয়াবহতাকেই স্পষ্ট ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে সকলের কাছেই।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর