বাংলা হান্ট ডেস্ক : এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় গত শুক্রবার ইডির হাতে গ্রেফতার হন বলাগড়ের তৃণমূল যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee)। শান্তনু গ্রেফতার হতেই তাঁর একের পর এক সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এলাকাবাসীরা জানান, বিলাসবহুল বাড়ি, বাগানবাড়ি, ধাবা রয়েছে শান্তনুর। বলাগড়ে গঙ্গার ধারে বিরাট এলাকাজুড়ে রয়েছে এই বাগানবাড়ি। তবে শুক্রবারের ঘটনার পর শনিবার সকাল থেকেই বন্ধ বাগানবাড়ির সদর দরজা।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে খবর, এই বাগানবাড়ির জায়গাটিও শান্তনুর নিজের নয়। তিনি নাকি নিজের প্রভাব খাটিয়ে হাতিয়ে নিয়েছিলেন একটা সময়। রাত বাড়লেই এই বাগানবাড়িতে শুরু হতো নামী দামি গাড়ির আনাগোনা। কে বা কারা আসতেন তা বাইরে থেকে কিছুই বোঝা যেত না। কারণ, সমস্ত গাড়ির কাচই তোলা থাকত। বাগানবাড়ির দরজা খুলতেই ঢুকে যেত সেইসব গাড়ি। এই রহস্যময় গাড়িগুলিতে কারা আসতেন তা নিয়েও তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা।
এলাকার মানুষ জানান, চাদরা বটতলা এলাকার এই বাগানবাড়ির ভিতরই গভীর রাত পর্যন্ত চলত নাচ-গানের আসর। আমোদ-প্রমোদে ভাসতেই এখানে আসা অতিথিরা। বাগানবাড়ির চারিদিক উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। চারদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো। ভিতরে যে ঠিক কী চলছে, তা জানতো না কেউই। জানা যাচ্ছে, এলাকার উঁচু বাড়িগুলির ছাদে উঠলে দেখা যেত ভিতরে ইতি উতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন মহিলারা। নামিদামি পোশাক পরে ঘুরতেন লোকজন। তবে গেটের ভিতরে ঢোকার আগে অবধি গাড়ির কালো কাচ তোলাই থাকত। তাই ওই বাড়ির অথিতিরা কারা তা বোঝার কোনও উপায় ছিল না।
এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “অনেক রাত পর্যন্ত গানবাজনা হতো। বহু পুরুষ, মহিলা আসতেন। নীলবাতির গাড়িও অনেক এসেছে। এই রিসর্টে কুন্তল ঘোষকেও আসতে দেখা গিয়েছে। এখানে তো পথসভাও করেছে কুন্তল। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে দু’জন পাশাপাশি বসে ভাষণও দিয়েছে।’ নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির কাছে এই শান্তনু ‘মিডলম্যান’ অর্থাৎ মধ্যস্থতাকারী। একজন মধ্যস্থতাকারীর এমন প্রতিপত্তির বহরে হতবাক সকলে।
এলাকার মানুষের দাবি, শান্তনুর এই কীর্তির কথা মুখে মুখে বহুদিন ধরেই ঘুরছে। তাঁর হাত ধরে চাকরি পাওয়া দু’ একজন ইতিমধ্যেই চাকরি হারিয়েছেন। শান্তনুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অ্যাডমিট কার্ড, সুপারিশপত্রের পাশাপাশি মোট ৩১২ জন চাকরি প্রার্থীর তালিকার হদিশ পেয়েছে ইডি।