জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যার পর ডায়ারের মুখোমুখি হয়েছিলেন নেহরু, বলতে পারেননি একটা কথাও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের ইতিহাসে নৃশংস ঘটনাগুলির মধ্যে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড অন্যতম একটি। একইসাথে কয়েকশ ভারতীয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে এই হত্যাকাণ্ডে। ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল বৈশাখীর দিনে অমৃতসরে সংঘটিত “জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যা” তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকের এক নির্লজ্জ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

ওখানে জড়ো হওয়া নিরীহ ভারতীয়দের একজন উন্মাদ ব্রিটিশ অফিসার জেনারেল ডায়ার কার্যত “হত্যা” করেছিলেন। মূলত, বৈশাখী উদযাপনের জন্য সেখানে জড়ো হওয়া শত শত নিরস্ত্র নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধর ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন জেনারেল ডায়ার।

এমতাবস্থায়, তৎকালীন চরমপন্থী গোষ্ঠীর সদস্যরা তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, ওই নিরপরাধ ভারতীয়দের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ডায়ারকে গুলি করে হত্যা করা হবে। কিন্তু সেই আবহেই চরমপন্থীদের অন্যতম একজন সদস্য, জওহরলাল নেহেরু এই গণহত্যার পরেই একবার জেনারেল ডায়ারের সাথে ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন। এমনকি, ট্রেনে ডায়ারের বিরোধিতা করার পরিবর্তে, নেহেরু চুপ করে তাঁর কথাও শুনছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই সকলের কাছেই এটি একটি কাকতালীয় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়।

নেহেরু ও জেনারেল ডায়ার মুখোমুখি হলেন:
জানা যায়, লাহোরে হান্টার কমিটির সামনে বক্তব্য দেওয়ার পর ডায়ার দিল্লিতে ফিরছিলেন। নেহরু তাঁর আত্মজীবনী “মেরি কাহানি”-তে লিখেছেন, “১৯১৯ সালের শেষের দিকে আমি রাতের ট্রেনে দিল্লির উদ্দেশ্যে অমৃতসর থেকে আসছিলাম। আমি যে বগিতে প্রবেশ করেছিলাম তার মাত্র একটি বার্থ খালি ছিল। আমি গিয়ে শুয়ে পড়লাম সেখানে। কিছুক্ষণ পর আমি একজন ব্রিটিশ অফিসারকে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে উচ্চস্বরে এবং সগর্বে কথা বলতে শুনি। আমি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যে জেনারেল ডায়ারই সেখানে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

শুধু তাই নয়, তিনি আরও জানিয়েছিলেন, “ডায়ার অহঙ্কারের মাধ্যমে বলছিলেন কীভাবে পুরো অমৃতসর শহর তাঁর সামনে জীবন ভিক্ষা করছে। তিনি একবার ভেবেছিলেন যে, এই শহরটি তিনি নিজেই ধ্বংস করবেন, কিন্তু তারপর আমি থামলাম।” মূলত, নেহরু পুরো ঘটনাটি শুনতে থাকেন এবং অবশেষে দিল্লিতে পৌঁছে সেই ট্রেন থেকে নেমেও পড়েন।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর