‘আজ আমার পাশে কেউ নেই’, পুলিশের কাছে আক্ষেপ ‘হতাশ” পার্থর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কথায় বলে ‘আজ যে রাজা কাল সে ফকির।’ ক্ষমতায় থাকা আর ক্ষমতা চলে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্যটা ঠিক কী তা আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) থেকে ভালো কেউ জানেন না। তিনি শুধুমাত্র প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন না, ছিলেন দলের একজন প্রথম সারির সৈনিক। কিছুদিন আগে পর্যন্তও দলের মহাসচিবের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন তিনি। দলের যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি নিশ্চিত।

সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ থাকতেন একেবারে সামনের সারিতে। ২৩ জুলাইয়ের পর যেন এক মুহুর্তে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে। ইডি হেফাজতের সময়সীমা শেষে আদালতের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। তাঁর বিরুদ্ধে উঠে আসছে একাধিক মারাত্মক অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে একদা শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিবের আক্ষেপ, ‘পাশে কেউ নেই!’

শুক্রবার নগর দায়রা আদালত পার্থর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বিচার পর্ব শেষ হওয়ার পর তাঁকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলে। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর গলায় শোনা যায় হতাশার সুর। পুলিশ সূত্রে খবর, দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের আক্ষেপের সুরে পার্থ বলেন, ‘দেখেছেন, আজ আমার পাশে কেউ নেই’। তারপর বাকি রাস্তাটা চোখ বন্ধ করেই বসেছিলেন পার্থ।

বছর খানেক আগে এরকমই এক সকালে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদ মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সে দিন দলীয় বিধায়কদের পাশে দাঁড়াতে নিজাম প্যালেসে দৌড়ে গিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। সেবার রীতিমতো ধর্নায় বসে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। আর পার্থর ক্ষেত্রে ছবিটা একেবারেই উল্টো।

২৩ জুলাই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করার পর থেকে সিজিও কমপ্লেক্স বা আদালত, কোথাও তৃণমূলের কোনও নেতা বা মন্ত্রীদের টিকিটিও দেখতে পাওয়া যায়নি। সাত দিনের মধ্যেই হাতছাড়া হয়েছে মন্ত্রিত্ব। চলে গেছে তৃণমূলের পদ। এই মুহুর্তে তিনি তৃণমূলের শুধুমাত্র একজন বিধায়ক। তিনি সেই পদও ছাড়তে রাজি বলে আদালতে জানান পার্থর আইনজীবী। পার্থ জেলে যাওয়ার পর থেলে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র যে ভঙ্গিতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, তাত এটা পরিষ্কার যে তৃণমূলের পক্ষ থেকে পার্থর পাশে আজ সত্যিই ‘কেউ নেই’।

নিজের অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ওঁকে যেন কোনও বাড়তি সুবিধা না দেওয়া হয়। আশা করি জেল কর্তৃপক্ষ ওঁকে একদম সাধারণ বন্দির মতোই রাখবে। একজন দলীয় মুখপাত্রের এই মন্তব্য কি একান্তই ব্যক্তিগত? নাকি এই মন্তব্য আদতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের?


Sudipto

সম্পর্কিত খবর