বাংলাহান্ট ডেস্ক: ২০২৫ সালে অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) মতো এক বড় সামরিক অভিঘাত সামলে উঠতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। এপ্রিল মাসে পাহেলগাঁওতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ৭ মে শুরু হওয়া ভারতের এই সীমিত কিন্তু নিখুঁত সামরিক অভিযান পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বড় আঘাত হানে। ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়, যার সত্যতা প্রথমে অস্বীকার করলেও বছরের শেষে তা মেনে নিতে বাধ্য হল ইসলামাবাদ।
অপারেশন সিঁদুরের ভয়াবহতা স্বীকার করল পাকিস্তান:
পাকিস্তানের (Pakistan) উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে স্বীকার করেন যে, ১০ মে ভারতের হামলায় নূর খান বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি জানান, ওই সংঘাতের সময় পাকিস্তান সরাসরি ভারতের সঙ্গে মধ্যস্থতার আবেদন না করলেও, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং সৌদি আরবের বিদেশমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান যোগাযোগ করতে আগ্রহী ছিলেন। দারের এই বক্তব্য পূর্ববর্তী বয়ান ও বাস্তবতার মধ্যে ব্যবধান উন্মোচন করে।
আরও পড়ুন:দিনে করতেন ওয়েটারের কাজ, রাতে চলত প্রস্তুতি! UPSC-তে সফল হয়ে স্বপ্নপূরণ জয়গণেশের
এছাড়া ইসহাক দার প্রকাশ করেন যে, অপারেশন চলাকালীন ৩৬ ঘণ্টায় অন্তত ৮০টি ভারতীয় ড্রোন পাকিস্তানি আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী ৭৯টি ড্রোন প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও, একটি ড্রোন একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানে ও কয়েকজন সেনাকে আহত করে। এই স্বীকারোক্তি ভারতের অভিযানের ব্যাপকতাকেই সামনে নিয়ে আসে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির একটি মন্তব্য থেকে সে সময়ের তীব্র চাপের চিত্র ফুটে ওঠে। তিনি প্রকাশ করেন যে, অভিযানের সময় তাঁর সামরিক সচিব তাঁকে নিরাপত্তার জন্য বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। জারদারির বক্তব্য, “নেতারা বাঙ্কারে বসে মরেন না, তারা যুদ্ধক্ষেত্রেই মরেন,” যা তখনকার উত্তপ্ত পরিস্থিতির ইঙ্গিত বহন করে।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ! SSC ডিভিশন বেঞ্চে যেতেই সাময়িক ‘স্বস্তি’
এই অভিযানের প্রভাব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কৌশলে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখেছে। ঘটনার পর থেকে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ড্রোন-বিরোধী পরিকাঠামো জোরদার করতে তৎপর হয়েছে। রাওয়ালাকোট, কোটলি ও ভিম্বর সেক্টরে ড্রোন শনাক্তকরণ ও জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখাজুড়ে ৩৫টির বেশি বিশেষায়িত ড্রোন-বিরোধী ইউনিট সক্রিয় করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, অপারেশন সিঁদুর পাকিস্তানের সামরিক মনস্তত্ত্বে যে আঘাত দিয়েছে, তা থেকে উত্তরণ দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ হবে।












