বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, চিনে হাঙর ক্লাসের সাবমেরিন চালু করেছে পাকিস্তান নৌবাহিনী (Pakistan Navy)। এই সাবমেরিনটি চিন দ্বারা নির্মিত হয়েছে। যেটি এখন পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জানিয়ে রাখি যে, পাকিস্তান নৌবাহিনী তাদের সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করতে চিনের উহান শহরে তার দ্বিতীয় হাঙর ক্লাসের সাবমেরিন পিএনএস/এম শুশুক চালু করেছে। শনিবার একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। হাঙর ক্লাসের সাবমেরিনের জন্য চুক্তিটি ২০১৫ সালে চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ইসলামাবাদ সফরের সময় চূড়ান্ত হয়েছিল। সেই সময় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং চায়না শিপবিল্ডিং অ্যান্ড অফশোর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির মধ্যে ৮টি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি হয়।
বড় চমক পাকিস্তান নৌবাহিনীর (Pakistan Navy):
দুই দেশের মধ্যে ওই চুক্তির আওতায় ৪ টি সাবমেরিন চিনে এবং বাকি ৪ টিসাবমেরিন প্রযুক্তি হস্তান্তরের আওতায় করাচি শিপইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসে নির্মাণ করার কথা ছিল। এদিকে, উহানে এই লঞ্চ ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনীর উপপ্রধান, পাকিস্তান ওয়েস আহমেদ বিলগ্রামী।
পাকিস্তানি নৌবাহিনী হাঙর ক্লাসের সাবমেরিন চালু করেছে: এই প্রসঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীর (Pakistan Navy) ডিরেক্টরেট জেনারেল অব পাবলিক রিলেশনস বিবৃতিতে বলেন “অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়, নৌবাহিনীর ভাইস চিফ এই অঞ্চলের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে সামুদ্রিক নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ ও অনুকূল সামুদ্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।” তিনি জোর দিয়েছিলেন যে অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং সেন্সর দিয়ে সজ্জিত হাঙর ক্লাসের সাবমেরিনগুলি ওই অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য এবং সামুদ্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” পাকিস্তানের দাবি, এই সাবমেরিনের রাডার এড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে এবং সবার কাছ থেকে লুকিয়ে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে পাকিস্তানের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে।
এদিকে, পাকিস্তানি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই সাবমেরিন দিয়ে স্ট্যান্ড অফ রেঞ্জে সুনির্দিষ্ট হামলা চালানো যাবে। হাঙর ক্লাসের এই সাবমেরিন পাকিস্তানের নৌবাহিনীর (Pakistan Navy) আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টার অংশ। ২০১৮ সালে, পাকিস্তান চারটি MILGEM ক্লাসের কর্ভেট পাওয়ার জন্য তুরস্কের সাথে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া, Agosta 90B ক্লাসের সাবমেরিন আপগ্রেড করার জন্য পাকিস্তান তুরস্কের অস্ত্র কোম্পানিকে নিযুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: জোরকদমে চলছে টক্কর! হিটম্যানের পর কে হবেন ভারতের অধিনায়ক? এগিয়ে রয়েছে এই ৩ নাম
ভারতের কালভারী ক্লাসের সাবমেরিনের সাথে তুলনা: জানিয়ে রাখি, পাকিস্তানের হাঙর ক্লাস সাবমেরিন ভারতের কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিনকে মোকাবিরলা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ভারতীয় সাবমেরিন ফ্রেঞ্চ স্করপেন ক্লাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। ভারত বর্তমানে ৬ টি কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিন পরিচালনা করছে এবং ২০৩০-এর দশকের প্রথম দিকে তার নৌবাহিনীকে আরও ৩ টি সাবমেরিন সরবরাহ করবে। আকারের দিক থেকে, পাকিস্তানি হাঙর ক্লাস সাবমেরিন ভারতীয় কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিনের চেয়ে অনেক বড়। কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিনের ওজন ১,৭৭৫ টন এবং লম্বায় ৬৭.৫ মিটার। অন্যদিকে হাঙর ক্লাসের সাবমেরিনের ওজন ২,৮০০ টন এবং ৭৬ মিটার লম্বা ও ৮.৪ মিটার চওড়া। ভূপৃষ্ঠে থাকাকালীন, এর ড্রাফট (জলের পৃষ্ঠের নিচে জাহাজের গভীরতা) ৬.২ মিটার।
আরও পড়ুন: বড় চমক KKR-এর! রাহানের সামনেই ভেঙ্কটেশকে করা হল ক্যাপ্টেন, অবাক অনুরাগীরাও
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অর্থ হতে পারে যে পাকিস্তানি সাবমেরিনের ক্রুরা অগভীর, উপকূলীয় জলে আরও বেশি আরামদায়ক জীবনযাপন করবে। তবে সাবমেরিন অপারেশনের ক্ষেত্রে এটি একটি বিশাল ত্রুটি। ভারতীয় কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিন পাকিস্তানি সাবমেরিনের (Pakistan Navy) চেয়ে অনেক বেশি গতিশীল। পাকিস্তানি সাবমেরিনের সর্বোচ্চ গতি ২০ নট (ঘণ্টায় ৩৭ কিমি)। পাশাপাশি, কালাভারী ক্লাসের সাবমেরিনগুলি, পাকিস্তানি হাঙর ক্লাসের মতো, ডিজেল-ইলেকট্রিক প্রপালশনে চলে। তবে, এটা বিশ্বাস করা হচ্ছে যে পাকিস্তানি সাবমেরিনকে AIP প্রযুক্তি দিয়ে আপগ্রেড করা যেতে পারে এবং যদি এটি ঘটে তবে এটি ভারতীয় সাবমেরিনের তুলনায় একটি বড় সুবিধা হবে। এর অর্থ হল জলের নিচে সহ্য ক্ষমতার ক্ষেত্রে হাঙর ক্লাসের সাবমেরিন সম্ভাব্যভাবে কালভারী ক্লাসের সাবমেরিনের থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে।