জ্ঞান হওয়ার আগেই মাতৃহারা, পাঁচ মাস বয়স থেকে ‘যশোদা মা’ হয়ে পরাণ বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়কে বড় করেছেন তাঁর পিসি

বাংলাহান্ট ডেস্ক: কথায় বলে, মায়ের জায়গা কেউ নিতে পারে না। হ‍্যাঁ, বিকল্প হতে পারে। কিন্তু মা তো একজনই হয়। কিন্তু অভিনেতা পরাণ বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের (Paran Banerjee) কাছে ‘মা’ শব্দটার অর্থ অন‍্য রকম। ছোট থেকে পিসিকেই নিজের মা বলে জেনে এসেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। জ্ঞান হওয়ার আগে থেকেই পিসিকেই নিজের মায়ের স্থানে বসিয়েছেন তিনি।

পরাণ বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের যখন মাত্র পাঁচ মাস বয়স, তখনি প্রয়াত হন তাঁর জন্মদাত্রী মা। তখনো জ্ঞান হয়নি ঠিক ভাবে। মা বাবা বলে ডাকা অনেক পরের কথা, জন্মদাত্রীর কোলের ওমটা শুধু বুঝতে শেখে সন্তান। সে সময়েই মাকে চিরতরের জন‍্য হারিয়ে ফেলেন অভিনেতা।

90305013
একরত্তিকে নিয়ে মহা চিন্তায় পড়েছিলেন পরাণ বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের বাবা। শেষে অনেক ভেবে নিজের পিসতুতো বোনের হাতেই তুলে দেন ছেলেকে। সেই থেকেই পিসিকে মা বলে ডেকে এসেছেন তিনি। সংবাদ মাধ‍্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অভিনেতা আরো একটি তথ‍্য জানান।

পরাণ তাঁর আসল নাম নয়। জন্মের পর তাঁর নামকরণ হয়েছিল ‘মোহন’। কিন্তু পিসির বাড়িতে আসতে বদলে যায় সেই নাম। দিদা ‘পরাণের ধন’ বলে বুকে টেনে নিয়েছিলেন ছোট্ট মোহনকে। তারপর থেকেই মোহন হয়ে যায় পরাণ। আর দিদাকে ‘দাদু’ বলে ডাকতে শুরু করেন তিনি।

পিসিকে শুধু মা বলে ডাকাই নয়, মায়ের মতোই চিরকাল আদর শাসন পেয়ে এসেছেন অভিনেতা। সাক্ষাৎকারে পরাণ তুলে ধরলেন ছোটবেলার একটা স্মৃতি। লুকিয়ে লুকিয়ে নারকেল খাচ্ছিলেন তিনি। মা ঠিকই দেখতে পেয়েছিলেন। উঠোনে টেনে এনে জাঁতা ঘোরানোর লাঠি দিয়ে মেরেছিলেন শিরদাঁড়ার উপরে।

দাদু দেখতে পেলে সে যাত্রায় রক্ষা পান ছোট্ট পরাণ। সেদিন সন্ধ‍্যাবেলাই আবার সেই মা-ই তাঁকে ডেকে পিঠে গরম সেঁক দিয়ে দিয়েছিলেন। ছেলের কষ্টে মায়ের চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়েছিল জল‌। মা এখনো জীবন্ত রয়ে গিয়েছেন অভিনেতার কাছে। মাকে শেষ বারের মতো দেখতে যাননি তিনি।

জন্মদাত্রীর মৃত‍্যু হয়েছিল তাঁর জ্ঞান হওয়ার আগেই। আর যে মা মানুষ করলেন তাঁর শেষ মুহূর্ত জেনেশুনেই দেখেননি পরাণ। তাঁর বিশ্বাস, যেটা তিনি দেখেননি সেটা ঘটেনি। মা এখনো বেঁচে রয়েছেন তাঁর মনে।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর