বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশের প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক, শাসক এবং বিরোধীদলের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা এমনকি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বিরোধী মুখ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi ) এবং বাংলায় মমতা ব্যানার্জির ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জীর (Abhishek Banerjee) ফোনেও আড়ি পেতেছে পেগাসাস। শুধু তাই নয় হ্যাক করা হয়েছে তৃণমূলের জয়ের কান্ডারী তথা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) ফোনও। একথা শোনার পর পিকে নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনিও কিছু সন্দেহ করেছিলেন তাই পাঁচবার প্রায় হ্যান্ডসেট বদলে ফেলেছিলেন তিনি, কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
তিনি বলেন, “পাঁচবার হ্যান্ডসেট বদলেছি। তা-ও হ্যাকিং বন্ধ করতে পারিনি। সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগেও হ্যান্ডসেট বদলে দিয়েছিলাম।” ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও এই পেগাসাস সফটওয়্যারটির জনক। তারা আগেই জানিয়েছে বৈধ সরকার ছাড়া অন্য কাউকে এই সফটওয়্যার বিক্রি করা হয় না। এর ব্যবহার হয় মূলত আতঙ্কবাদ থেকে বাঁচতে। কিন্তু ভারতীয় ক্ষেত্রে এর ব্যবহার যে কিছুটা অন্যভাবেই হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। এনিয়ে গতকালই প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। তদন্তের দাবি করেছিলেন তিনি। যদিও নতুন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnav) জানিয়েছেন, এনএসও নামক ওই সংস্থাই জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমে তারা যাদের ওই সফটওয়্যার বিক্রি করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে তার অনেকগুলোই সঠিক নয়।
তবে পেগাসাসের (Pegasus) মাধ্যমে পিকের ফোন যে হ্যাক করা হয়েছিল এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ল্যাবের ডিজিটাল ফরেন্সিক রিপোর্টে তথ্য অনুযায়ী এমনকি ২৮ এপ্রিলও পিকের ফোন ওই সংস্থার মাধ্যমে হ্যাক করা হয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এর ২৪ ঘন্টা পরেই ছিল বাংলায় শেষ পর্বের নির্বাচন। আর বাংলা নির্বাচনের জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী যে ছিলেন পিকে এবং অভিষেক তা বলাই বাহুল্য। সংস্থার মাধ্যমে আরও জানানো হয়েছে ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ৩০০ টি ভারতীয় নম্বরের উপর ধারাবাহিকভাবে হ্যাকিং চালানো হয়েছে।
পিকের কোম্পানি আইপ্যাক জানিয়েছে, বিশেষত তামিলনাড়ুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকবার সময়ের আগে ফাঁস হয়ে গিয়েছে তাদের পরিকল্পনা। এই ঘটনা ঘটার পরেই তারা ল্যাপটপ এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার বন্ধ করে দেন। যদিও পিকে নিজে জানিয়েছেন, এত বড় হ্যাকিংয়ের বিষয়ে তেমন ধারণা ছিল না তাদের, বরং তারা পুরো বিষয়টিকে গুপ্তচরের কান্ড বলেই সন্দেহ করেছিলেন প্রথম দিকে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ওই সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকেই পিকের ফোনে আড়িপাতার কাজ চালাচ্ছিল ওই সফটওয়্যার।