রঘুনাথপুরে ৬০০ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে ইস্পাত কারখানা, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই হচ্ছে বিনিয়োগ

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ইন্ডাস্ট্রি হাব ফিরছে রঘুনাথপুরে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ও বিভিন্ন জটিলতায় ফেঁসে থাকার পর অবশেষে শিল্প ফিরছে সেখানে। বামফ্রন্টের জমানায় রঘুনাথপুরে শুরু হয় শিল্পহাব (Industry Hub) তৈরির কাজ। সেই সময় সেখানে একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, স্টিল ও লৌহ-ইস্পাত শিল্প করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা শুরু হয়। যদিও তখন কেবল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়া আর কোনও কাজ হয়ে ওঠেনি। 

রাজনৈতিক পালাবদলের পর দু’টি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। একুশের নির্বাচনের আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভায় রঘুনাথপুরে শিল্পহাব তৈরির কথা উল্লেখ করেন। এমনকি শিল্প সম্মেলনেও এই জায়গায় শিল্পের উপযুক্ত পরিবেশের কথা বলা হয়। এরপর এ নিয়ে রাজ্য সরকারের একটি বোর্ড গঠন করা হয়। এবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণারমত রঘুনাথপুরে কাজ শুরু করেছে একটি কারখানার কর্তৃপক্ষ।

রঘুনাথপুরের এই ইন্ডাস্ট্রি হাবের নাম দেওয়া হবে ‘জঙ্গল সুন্দরী কর্ম নগরী’। ইতিমধ্যেই সেখানে প্রায় ৬০০ একর জমির উপর কারখানা তৈরির কাজ চলছে। এর খরচ হবে ৪৫০০ কোটি টাকা। এই কারখানাটি গড়ে তোলার আগে রঘুনাথপুর ১ নম্বর ব্লক কমিউনিটি হলে একটি জনশুনানি হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। 

একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক তামিল ওভিয়া এস, রঘুনাথপুর–১ বিডিও রবিশঙ্কর গুপ্তা, রঘুনাথপুর–১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অষ্টমী হাঁসদা এবং আরও অনেকে। এখানে মহকুমাশাসক জানান, শিল্প নিয়ে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মত জানতে চাওয়া হয়েছিল। জনশুনানিতে বাসিন্দারা শিল্পের পক্ষেই মত দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘুনাথপুর এলাকার লছমনপুর, ঝাড়ুখামার, শিউলিবাড়ি, দিগারডি, শিকরাট্যাড়, সেনেড়া এবং তলকসাকরা মৌজার প্রায় ৬০০ একর জমি জুড়ে গড়ে উঠছে কারখানা। এই জমির একাংশ অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এই এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা চান সেখানে শিল্প হোক। তবে তাঁদের অনুরোধ, স্থানীয়রা যেন সেখানে কাজ পান।

পাশাপাশি জমিহারা পরিবারগুলির কথা যাতে ভাবা হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। জমির উপযুক্ত দাম চাইছেন স্থানীয় মানুষ। শিল্প হলে দূষণ বাড়তে পারে। তাই তাঁরা চাইছেন, সরকার দূষণমুক্ত পরিবেশ ও এলাকার উন্নয়নের কথাও ভাবুক। এই বিষয়ে কী জানিয়েছে শাসক দল তৃণমূল? পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “শিল্প হলে কর্মসংস্থান হওয়ার পাশাপাশি এলাকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।

রাজ্য সরকার শিল্প তৈরি করার জন্য তৎপর।” অন্যদিকে, কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারখানার জন্য প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার জায়গায় সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে। ৬০০ একরের মধ্যে ৪০০ একর জায়গা জুড়ে তৈরি হবে কারখানা। বাকি ২০০ একর জায়গায় বৃক্ষরোপণ হবে। একবার কারখানা হয়ে গেলে এখানে আট হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও ১০ হাজার মানুষের পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে।

Avatar
Subhraroop

সম্পর্কিত খবর