রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সচেতনতার পাঠ দিতেন সবাইকে, শেষপর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কাতেই প্রাণ হারালেন ঈশ্বর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রতি মুহূর্তে কাজ ছিল রেল দুর্ঘটনায় বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা। শুধু তাই নয় যারা রেললাইনে কাটা পড়তেন নিজের হাতে তাদের মৃতদেহ তুলে নিয়ে গিয়ে মর্গে পাঠাতেন। প্রায় তিন যুগের কাছাকাছি সময় রেল পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর হিসেবে কাজের সূত্রে বহু রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিজের চোখের সামনে দেখেছেন।

এবার নিজেই হয়ে গেলেন রেল দুর্ঘটনা শিকার। ট্রেনে ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে হরিয়ানার পানিপতের রেল পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর ঈশ্বর সিংহের। যে ঈশ্বর একসময় ট্রেনে কাটা পড়া ব্যক্তিদের নিজের হাতে তুলে নিতেন, এবার তার শরীরেই কোপ পড়ল।

জানা গিয়েছে, গত ৩২ বছর ধরে পানিপত জিআরপিতে কর্মরত ছিলেন ঈশ্বর। প্রতি দিনের মতোই শুক্রবার সকাল ৭টায় কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ঈশ্বর। পরিবারের তরফে জানা যায়, ঈশ্বর রওনা দিতেই খবর আসে স্টেশন থেকে ৫০০ মিটার দূরে এক যুবকের দেহ রেললাইনের উপর পড়ে রয়েছে। এরপরই তড়িঘড়ি তিনি ছুটে যান ঘটনাস্থলে। যুবকের দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে মর্গের উদ্দেশে পাঠানোর পরেই রেললাইন পার হচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, সেই সময়ই প্রচন্ড গতিতে আসা একটি ট্রেন ঈশ্বর সিংহকে ধাক্কা মারে। ট্রেনে ধাক্কা খেতেই সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয় তার।

panipat

দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের দেহ সরিয়ে আনতেন তিনি। কিন্তু তাঁর পরিবার স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যে, সারাজীবন ধরে যিনি ট্রেনে কাটা লাশ উদ্ধার করেছেন, এক দিন তিনিই ট্রেনে কাটা পড়বেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, ঈশ্বরের নিয়তির কাছে হেরে গেল তার দীর্ঘ ৩২ বছরের জনসচেতনতার প্রচার। তবুও তিনি না থেকেও তার সচেতনতার বার্তা থেকে গেল আমজনতার মনে।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর