বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত ৯ই অক্টোবর শিল্পক্ষেত্র থেকে অবসান হয় একটি বিরাট অধ্যায়ের। সকলকে ছেড়ে শান্তির দেশে পাড়ি দেন ভারতরত্ন শিল্পপতি রতন টাটা (Ratan Tata)। যদিও ৬ই অক্টোবর খবর আসে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এর ঠিক তিন দিনের মাথায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর রতন টাটার (Ratan Tata) মৃত্যুর পর থেকেই উঠে এসেছে বহু প্রশ্ন। তিনি ঠিক কি কারণে মারা গিয়েছে এই খবরই চাউর হতে শুরু করে। আর সেখান থেকেই উঠে আসে হাইপোটেনশনের মত রোগের কথা।
হাইপোটেনশনই মৃত্যু রতন টাটার (Ratan Tata)
রতন টাটার (Ratan Tata) অসুস্থতাকে ঘিরে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, তিনি (Ratan Tata) বেশ কিছুদিন ধরেই নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশনের সমস্যায় ভুগছিলেন। এই হাইপোটেনশনের কারণেই রতন বাবুর (Ratan Tata) শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলির কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি শরীরে জলের মাত্রাও কমতে থাকে বলে জানান চিকিৎসকরা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই হাইপোটেনশন রোগ আসলে কি? এটা শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর?
হাইপোটেনশন রোগের ব্যাখ্যা:
রক্তচাপ মাত্রা কখন কি হয় সেটা বলা যায় না। কখনো বাড়তে থাকে কখনো আবার কমতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর তেমনি রক্তচাপের মাত্রা কমতে থাকলে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তচাপের মাত্রা যদি ১১০/৬০ হয় তাহলে ঐ ব্যক্তি নিম্ন রক্তচাপ কিংবা হাইপোটেনশনের শিকার। এই রোগের কারণে যে কারোরই মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও শরীরে জল কমে গেলে হাইপোটেনশন হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই রোগের লক্ষণ গুলি কি কি?
১) রক্তচাপ কমে গেলে সবার আগে যে লক্ষণটি দেখা যাবে সেটি হচ্ছে শরীর অসম্ভবভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
২) সময় অসময় মাথা ঘোরানো, মাথা ঝিম ধরে যাওয়া, হাঁটতে সমস্যা ইত্যাদি এর অন্যতম লক্ষণ।
৩) শুধু তাই নয়, শরীর দুর্বলতার কারণে কোন কাজ করতে না পারা, কোন কিছুর সাপোর্ট ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতেও সমস্যা হয়। এমনকি বুক ধড়ফড়, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
৪) এছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া, ঘনঘন জলের তেষ্টা পেতে পারে। মূলত নিম্ন রক্তচাপের কারণে জল শূন্যতা দেখা দেয়, ফলে এমনটা হয়।
৫) বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইপোটেনশনের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে চোখের ক্লিয়ার ফোকাসে সমস্যা।
আরও পড়ুন : ন্যানো কারখানার জন্য কেন সিঙ্গুরকেই বেছে নিয়েছিলেন রতন টাটা? অবশেষে ফাঁস হল আসল সত্য
এই রোগের কারণে আপনার কি কি সমস্যা দেখা দিতে পারে?
মনে রাখবেন রক্তচাপ কমে গেলে যেমন সমস্যা দেখা দেয়, তেমনি নিম্ন রক্তচাপের কারণেও বিভিন্ন সমস্যা হয়। রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক বিকল হয়ে যায়, কিডনি, হৃৎপিণ্ডে ঠিক ভাবে রক্ত চলাচল করতে পারে না। এরফলে কিডনি অ্যাটাক, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বড় বড় রোগের সম্মুখীন করতে হতে পারে।
এই নিম্নরক্তচাপ থেকে মুক্তি পেতে কি কি করবেন দেখে নিন:
১) শরীরে জল ঘাটতির কারণে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। তাই প্রতিদিন পরিমাণ মতো জল পান করুন। এতে করে শরীর আর্দ্র থাকবে এবং রক্তচাপ কমার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
২) কারো যদি অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে এই বদ অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে জলের ঘাটতি দেখা যায়। তাই এই বিষয়ে সাবধান হয়ে যান।
৩) নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে শরীরে সোডিয়ামের প্রয়োজন পড়ে। চেষ্টা করুন খাবারের পাতে প্রয়োজনমতো নুন রাখার। তবে অতিরিক্ত নয়।
৪) এছাড়া প্রতিদিন খাবারের পাতে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে রক্তচাপের মাত্রা সঠিক থাকে।