বাংলাহান্ট ডেস্ক: নব্বইয়ের দশক বা তার আগে হিন্দি সিনেমায় মায়ের চরিত্র মানেই বেশিরভাগ সাদা শাড়ি, দুঃখের জীবনে ক্লান্ত এক মহিলা। নায়কের মাকে এমন ভাবেই দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন দর্শকরা। সেই ধারায় পরিবর্তন আনেন অভিনেত্রী রিমা লাগু (Reema Lagoo)। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন তিনি। তবে সাদা শাড়ি, দুঃখী দুঃখী মুখে নয়। রিমা ছিলেন বলিউডের ‘কুল মম’।
রিমা লাগুর আসল নাম ছিল নয়ন ভাড়গড়ে। পরিবারেই ছিল অভিনয়ের চর্চা। তাঁর মা ছিলেন মরাঠি ইন্ডাস্ট্রির নামী মুখ। প্রথমে থিয়েটার দিয়েই অভিনয়ূর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। কম সময়ে নামও কামিয়ে নিয়েছিলেন। পাশাপাশি করতেন ব্যাঙ্কের চাকরি।
চাকরি করতে করতেই প্রেম আর তারপর বিয়ে। কিন্তু সন্তান জন্মের পরেই তিক্ততা বাড়ে স্বামীর সঙ্গে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর আবার অভিনয়ে ফেরেন রিমা। তবে এবারে থিয়েটারের মঞ্চে নয়, বড়পর্দায়। অবশ্য তাঁকে বলিউডে প্রবেশের পথটা করে দিয়েছিল থিয়েটারই। ‘মাই ফেয়ার লেডি’ নাটকে অভিনয়ের সময়ে শশী কাপুরের নজরে পড়েন রিমা।
কাজ করেন ‘কলিযুগ’ ছবিতে। সেখান থেকে ‘আক্রোশ’ ছবি। একের পর এক কাজ করেছেন তিনি। আক্রোশ ছবিতে কূলভূষণ খারবান্দার সঙ্গে শয্যাদৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতেও পড়েছিলেন রিমা।
অবশ্য এই ধরনের দৃশ্য বেশি করতে হয়নি তাঁকে। কারণ মায়ের চরিত্রে একবার অভিনয় শুরু করার পর থেকে মায়ের ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছিল রিমাকে। শুরুটা হয়েছিল ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবিতে জুহি চাওলার মা হিসাবে।
দর্শকদের এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে মায়ের চরিত্রেই স্থায়ী হয়ে যান রিমা। শাহরুখ থেকে সলমন, এমনকি বয়সে বড় সঞ্জয় দত্তের মায়ের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর ‘কুল’ মায়ের চরিত্র দারুন জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল রিমাকে।
দীর্ঘ অভিনয় কেরিয়ার তাঁর। শুটিং করতে করতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন রিমা। ২০১৭ সালে মহেশ ভাটের ছবির শুটিং করতে করতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ৫৯ বছর বয়সেই প্রয়াত হন বলিউডের ‘মা’।