মালদার পর কালনা, অ্যাম্বুলেন্স না মেলায় স্ট্রেচারে করেই রোগী নিয়ে গেলেন আত্মীরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : টাকা নেই তাই অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) ভাড়া করতে পারেনি রোগীর আত্মীয়রা। হাসপাতাল থেকেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্সের সুযোগ সুবিধা। তাই বাধ্য হয়েই স্ট্রেচারে করে রোগীকে নিয়ে পাড়ি দিলেন সিটিস্ক্যান করানোর উদ্দেশ্যে। শনিবারের বারবেলায় শহরের ব্যস্ত রাস্তা সাক্ষী রইল এই মর্মান্তিক দৃশ্যের। ঘটনা স্বীকার করে নিলেন পূর্ববর্ধমানের কালনা (Kalna) সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (Kalna Super Speciality Hospital) অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার।

kalna hospital

চেষ্টা করেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা

ঘটনাপ্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে, গতকাল সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একটি লরিতে ধাক্কা মারে সাহার আলিকে। সেই রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। চিকিৎসার স্বার্থে সিটিস্ক্যান করানোর প্রয়োজন হলে জানা যায়, হাসপাতালে সেই সুযোগ নেই, যেতে হবে বাইরে। এদিক ওদিক নানা চেষ্টার পরেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা।

আরও পড়ুন : ১০০-র বদলে লাগবে মাত্র এক টাকা! চারটি বিরল রোগের ওষুধ তৈরি করে তাক লাগাল ভারত

প্রশ্নের মুখে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল

তারপরেই বাধ্য হয়ে রোগীকে স্ট্রেচারে শুইয়ে সিটি স্ক্যান করানোর উদ্দেশ্যে এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন রোগীর আত্মীয়রা। তারপর থেকেই প্রশ্নের মুখে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিভাবে এই বিষয়টির উপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজর গেলনা? গোটা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাই বা নেই কেন? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন : ঘূর্ণাবর্ত থেকে ফের নিম্নচাপ, আমূল বদলাবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া! কী বলছে IMD রিপোর্ট?

কী বলছে রোগীর আত্মীয়রা?

এইদিন রোগীর আত্মীয় সিওর আলির সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘লরি ধাক্কা মেরেছে। সাইকেল থেকে নীচে পড়ে যায়। মাথায় ও বুকে লেগেছে। আজ ডাক্তার সিটি স্ক্যান করার কথা লিখেছেন। টাকা পয়সা ছিল না বলেই স্ট্রেচারে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে গেলাম। হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সের কোনও ব্যবস্থাই নেই। টাকার অভাবে অন্য অ্যাম্বুল্যান্সেরও ব্যবস্থা করতে পারিনি। হুইল চেয়ারও পাওয়া যাচ্ছে না।’

আরও পড়ুন : এবার কী পদত্যাগ? পিসি-ভাইপোর সংঘাতের মাঝেই বড় বয়ান দিলেন কুণাল ঘোষ

অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের জবাব

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালে যেসব টেস্ট হয় না সেগুলো বাইরেই করতে হয়। ওয়ার্ডে একটি রেজিস্টার রাখা রয়েছে। সেখানে সাক্ষর করে রোগীর আত্মীয় রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে পারেন। সিটি স্ক্যান এখানে নেই। আজ ওরা রেজিস্টারে সই করে রোগীকে বাইরে নিয়ে গিয়েছে। আমাদের হাসপাতালের গাড়ি আছে, ১০৮ অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। কোনও রোগী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমরা তার ব্যবস্থা করে দিই। এক্ষেত্রে যোগাযোগের কোনও একটা ত্রুটি হয়েছে। রোগী সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হয়ে আমরা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দিতাম। আজ যা ঘটেছে তা সত্যিই অমানবিক। কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। প্রশাসনের তরফেও যদি আমাদের জানানো হতো তাহলে আমরা ব্যবস্থা করে দিতাম।’

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর