বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: যে বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিলেন গোটা বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা ঠিক সেই বিষয়টাই হলো। রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে (Ranji Trophy Final) দ্বিতীয় দিনের শেষেই ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে গেল বাংলা (Bengal Ranji Team)। অর্পিত ভাসাভাডা (Arpit Vasavada), যিনি এই মরশুমে সৌরাষ্ট্রের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা, তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অসহায় দেখালো বাংলার বোলারদের। কখনো ভালো বোলিংয়ের বিরুদ্ধে স্রেফ ডিফেন্স করে, আবার কখনো হতাশ বোলারদের লাইন বা লেংথে ভুল হওয়া বলকে বাউন্ডারির রাস্তা দেখিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষেই ম্যাচটি পুরোপুরি বাংলার হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন সৌরাষ্ট্রের তারকা ক্রিকেটার।
এর আগে সেমিফাইনালে কর্নাটকের বিরুদ্ধেও ঠিক একই কাজ করেছিলেন তিনি। মায়াঙ্ক আগরওয়ালের দ্বিশতরানে ভর করে যখন কর্নাটক বড় স্কোর তুলেছিল, তখন শেলডন জ্যাকসনের শতরানের পাশাপাশি ভাসাভডার দ্বিশতরানে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসের শেষে লিড নিয়েছিল সৌরাষ্ট্র। এরপর চতুর্থ ইনিংসে ফের ৪৭ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন তিনি।
গতকাল সকালে বাংলার টপ অর্ডার পুরোপুরি ধ্বসে গিয়েছিল জয়দেব উনদকাট এবং চেতন সাকারিয়ার বাঁ-হাতি পেস বোলিংয়ের সামনে। ১৭৪ রানে শেষ হয়েছিল বাংলার ইনিংস। শাহবাজ আহমেদ ও অভিষেক পোড়েল ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। আজ সকালেও তেমনই কিছু হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু সকালের পরিবেশের ফায়দা পুরোপুরি তুলতে পারলেন না বাংলার বোলাররা। মুকেশ কুমার এবং ঈশান পোড়েল একটি করে উইকেট নিয়ে কিছুটা বিপাকে ফেলেছিলেন তাদের। কিন্তু শেলডন ও অর্পিত পরিস্থিতি সামলে নেন।
দ্বিতীয় সেশনে ঈশান পোড়েলের শর্ট বলে শেলডেন জ্যাকসন আউট হওয়ার পর আর কোনও সফলতা পায়নি বাংলা। দিনের শেষে অর্পিত ভাসাভডা ৮১ এবং চিরাগ জানি ৫৭ রান করে অপরাজিত থেকে গেলেন। বাংলার বোলারদের ম্যাচে ফেরার আর কোনওরকম সুযোগ দেয়নি তারা। দিনশেষে সৌরাষ্ট্রের স্কোর ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৭। তাদের হাতে লিড রয়েছে ১৪৩ রানের।
বাংলার হাতে এখন উপায় রয়েছে একটাই। গতকাল ২০০ রানের ভেতরে লিড রেখে যদি অলআউট করা যায় সৌরাষ্ট্রকে তখনই একমাত্র এই পরিকল্পনা কাজে লাগতে পারে। এরপর বাংলার ক্রিকেটারদের টি-টোয়েন্টি ঢংয়ে খেলে এই ২০০ রানের লিড অতিক্রম করতে হবে এবং তারপর চতুর্থ ইনিংসে সৌরাষ্ট্রের সামনে তাড়া করার মত একটা ভদ্রস্থ স্কোর প্রদান করতে হবে। যদিও এই ঘটনা এক প্রকার অসম্ভবেরই সামিল।
কিন্তু বাংলার বোলিং নিয়ে এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা টুর্নামেন্টে সেই অর্থে কোনও বড় বা শক্তিশালী দলের মুখোমুখি তেমনভাবে হয়নি বাংলা। হ্যাঁ, সেমিফাইনালে গতবারের চ্যাম্পিয়ন মধ্যপ্রদেশ কে বেশ দাপট দেখেই উড়িয়ে দিয়েছিল মনোজরা। কিন্তু যে পেস ব্যাটারি বাংলার শক্তির মূল উৎস, তাকে এই ইডেনের এমন পিচে কি করে সামলে নিলো সৌরাষ্ট্রের ব্যাটাররা! এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেও যদি বা পাওয়াও যায়, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।