বাংলা হান্ট ডেস্ক: পৃথিবী (Earth) এবং সমগ্ৰ সৌরজগতের (Solar System) জন্য সূর্য (Sun) যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর আলাদাভাবে বলার অপেক্ষা রাখেনা। এক কথায়, সূর্য না থাকলে পৃথিবীতে জীবনধারণ সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, বহু বছর ধরে সূর্যের অজানা রহস্য উদঘাটনের জন্য চেষ্টা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই ভারত তার প্রথম সোলার মিশন আদিত্য-L1-ও লঞ্চ করেছে। যা আগামী বছরের জানুয়ারিতে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবে। তবে, এই আবহেই আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA (National Aeronautics and Space Administration) একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে।
মূলত, দাবি করা হয়েছে যে, সূর্যের পৃষ্ঠে ৮ কিলোমিটারের মতো বড় একটি গর্ত তৈরি হয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই বড় গর্তটির প্রস্থ এতটাই প্রকাণ্ড যে সেটি কেবল একটি বা দু’টি নয় বরং ৬০ টি পৃথিবীকে গ্রাস করতে পারে। NASA এই গর্তের নাম দিয়েছে “করোনাল হোল”। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই করোনাল হোল থেকে সৌর তরঙ্গ আমাদের পৃথিবীর দিকে আসছে। যার কারণে পৃথিবীর রেডিও ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম ভেঙে পড়তে পারে।
এই গর্ত কবে শেষ হবে: জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এই করোনাল হোল একদিনের মধ্যেই সর্বোচ্চ আকারে পৌঁছেছে এবং গত ৪ ডিসেম্বর থেকে সরাসরি পৃথিবীর মুখোমুখি হচ্ছে। এই গর্তগুলি অস্বাভাবিক নয়। তবে তাদের আকার এবং সময় বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উল্লেখ্য যে, এহেন ঘটনা তখনই ঘটে যখন সূর্য তার ১১ বছরের কার্যকলাপ চক্রের শীর্ষে পৌঁছয়, যা সোলার ম্যাক্সিমাম নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: টাকা কামানোর সুবর্ণ সুযোগ, রেলের এই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করব সরকার! কিনে ফেলুন অল্প দামেই
এমতাবস্থায়, এটি ২০২৪ সালে শেষ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে উদ্বেগ ছিল যে সোলার উইন্ড প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে হতে পারে এবং এগুলি একটি মাঝারি G2 ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়কে প্ররোচিত করতে পারে। যেটি সম্ভাব্য রেডিও ব্ল্যাকআউটের কারণ হতে পারত। তবে Spaceweather.com সূত্রে জানা গিয়েছে সোলার উইন্ডের তীব্রতা প্রত্যাশার চেয়ে কম ছিল। যার ফলে শুধুমাত্র একটি দুর্বল G1 জিওম্যাগনেটিক ঝড় দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের চালু হল রোমিং? দিল্লি থেকে বিহারে গিয়ে বিপাকে মহিলা, ১ লাখের বিল পাঠাল Airtel
পৃথিবীর জন্য কতটা বিপদ: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সূর্যের ক্রিয়াকলাপ নিয়মিত সম্পন্ন হয়। যার মধ্যে রয়েছে সান স্পট, সোলার ফ্লেয়ার, করোনাল মাস ইজেকশন এবং বর্তমানের মতো করোনাল হোল। এই ঘটনাগুলি সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত। যা সোলার ম্যাক্সিমামের সময়ে মেরুর বিপরীতমুখী হয়। এদিকে, সান স্পটগুলি হল সূর্যের পৃষ্ঠের শীতল এলাকা যেখানে চৌম্বক ক্ষেত্র খুব শক্তিশালী হয়। পাশাপাশি, আমরা যতোই সোলার ম্যাক্সিমামের দিকে এগোচ্ছি ততই বিজ্ঞানীরা ঘন ঘন এবং তীব্র সৌর কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে, বর্তমান করোনাল হোল পৃথিবীর জন্য খুব একটা বড় বিপদের কারণ নয়। কারণ, এটি পৃথিবীর থেকে দূরের দিশায় অগ্রসর হয়।