বাংলা হান্ট ডেস্ক: সেই মঙ্গলবার থেকে ভয়ঙ্কর দাবানলে (Wildfire) ভষ্মীভূত হচ্ছে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া। এখনও পর্যন্ত থামেনি এই খাণ্ডব দাহন। দেখলে মনে হবে যেন প্রকৃতি প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই আগুনে পুড়ছে হাজার হাজার বাড়ি ঘর। ইতিমধ্যেই সকলকেই সেখান থেকে সরিয়ে নিরাপদে আশ্রয়স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে, নিজেদের ঘরবাড়ি এইভাবে পুড়ে যেতে দেখে ভেঙে পড়েছেন বহু মানুষজন। আবার কেউ কেউ, আগুনের তাপ, ধোঁয়াকে উপেক্ষা করেই বাড়িতে এসে দরকারি জিনিসপত্রের খোঁজ চালাচ্ছেন। যাতে পরবর্তীতে সমস্যা না হয়। শুধু দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়াই নয়, একই সাথে জ্বলছে আমেরিকার বৃহত্তম নগরী লস এঞ্জেলসও।
এই দাবানলে (Wildfire) ঠিক কত পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে?
বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, এই দাবানল (Wildfire) দেশের সবথেকে বড় ধ্বংসাত্মক দাবানল। এর আগে এমন চিত্র দেখেনি আমেরিকা। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে দাবানলকে বাগে আনতে বেশ ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে। ঝড়ের বাতাসের গতি কমলেও সেখানে উপস্থিত শুকনো ডালপালা, পাতা, আবহাওয়া ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থের কারণে অগ্নি নির্বাপণ কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, কয়েক লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সেইসাথে ১১ জন মানুষ এই দাবানলের প্রভাবে প্রাণও হারিয়েছেন।
ক্ষতি হয়েছে ১৫ হাজার কোটি ডলার: সূত্র মারফত জানা যায়, এই দাবানলের (Wildfire) প্রভাবে ১৩৫০০ কোটি ডলার থেকে ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমেরিকা সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ১০০ শতাংশ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। এই পর্যন্ত প্যালিসেডসে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২১,৬০০ একর জমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে ক্রমাগত এই বিধ্বংসী অগ্নিরূপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঘর থাকতেও সীমান্তে ঘরভাড়া নিচ্ছে BSF! ক্ষোভ উগরে মমতার কাছে চিঠি বনগাঁ পৌরপ্রধানের
আর ইটন অগ্নিকাণ্ডে মাত্র ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, ইটনে এখনও পর্যন্ত ১৪,০০০ একর জমিতে বনভূমি রয়েছে, সেখানে মাত্র ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। উল্টোদিকে, কেনেথ এলাকায় ১০০০ একরের মধ্যে ৫০ শতাংশ, হার্স্টে ৮০০ একরের মধ্যে ৭০ শতাংশ, আর লিডিয়ার ৪০০ একরের মধ্যে ৯৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। আর দাবানল (Wildfire) ছড়িয়ে পড়ার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমা কোম্পানিগুলি।
আরও পড়ুনঃ আর্যর সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, ‘প্রাক্তন’ শৌর্যর জন্মদিনে ‘রাই’ আরাত্রিকা লিখলেন, ‘ভালোবাসি’
ইতিমধ্যেই এই কোম্পানির মাথায় হাত পড়েছে। বিশেষ করে লস এঞ্জেলসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এবং মালিবু হল ক্যালিফোর্নিয়ার সবথেকে ব্যয়বহুল এলাকা। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই অগ্নিকাণ্ডের পর, এই বিমা কোম্পানিগুলির প্রিমিয়াম হুহু করে বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও এই খাণ্ডব দহনের কারণে ১২,০০০ ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর গাড়িও এই কারণে ধ্বংস হয়েছে। সবমিলিয়ে, দাবানলের (Wildfire) কারণে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া এবং লস এঞ্জেলসের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।