বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর (Bangaon Municipality former chairman Shankar Adhya) বিরুদ্ধে। ইডির অনুমান, হাজার হাজার কোটি কালো টাকা ‘সাদা’ করার করা হয়েছে তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যের সংস্থার মাধ্যমে! প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে ইডি (Enforcement Directorates)।
ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত শঙ্কর আঢ্যর নামে ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার সন্ধান মিলেছে। এই সংস্থা গুলির মাধ্যমে রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর বিপুল পরিমাণ কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে আশঙ্কা ইডির। তবে কেবল বালুই নন, ইডির অনুমান বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও অনেক প্রভাবশালীর কালো টাকা সাদা করেছে শঙ্কর আঢ্যর সংস্থা।
ইডির দাবি তদন্তে নেমে একাধিক নথিপত্র হাতে এসেছে তাদের। সেই সমস্ত নথি ঘেঁটে জানা যাচ্ছে, বিদেশি মুদ্রায় কনভার্ট করানোর জন্য ধৃত শঙ্করের সংস্থাগুলিতে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে। যার মধ্যে ৯-১০ হাজার কোটি টাকা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের বলে দাবি ইডির। তবে বাকি অর্ধেক পরিমাণ টাকা কারা বা কাদের নামে জমা পড়েছে সেই সংক্রান্ত সঠিক কোনো তথ্য মেলেনি। ইডির অনুমান, বিভিন্ন প্রভাবশালীদের টাকায় বেনামে এভাবে জমা করা হয়েছে।
ইডির দাবি জ্যোতিপ্রিয়র নামে যে ৯-১০ হাজার কোটি টাকা জমা পড়ে তার মধ্যে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বেআইনি ভাবে দুবাইয়ের এক সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, রেশন মামলায় এক সাক্ষীর মাধ্যমেই এই বিষয়ে পাকা তথ্য পেয়েছেন তারা। বিদেশী মুদ্রায় বিনিময় সংক্রান্ত একাধিক তথ্য সেই সাক্ষী ইডির কাছে খোলসা করেছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি শঙ্করের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থার মাধ্যমেই এই সব হয়েছে বলেও তিনি ইডিকে জানিয়েছেন। যদিও নিজের পরিচয় এখনও সামনে আনতে চায়নি সেই সাক্ষী।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে বাংলা ভাষাতে শুনানির সিদ্ধান্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের! কারণ কি? কি এমন ঘটল এজলাসে?
ওদিকে রেশন মামলার তদন্তে সোমবার সকালে একজোটে শহরের চার জায়গায় হানা দেয় ইডি। এদিন সল্টলেক সেক্টর ফাইভে রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যর হিসাব রক্ষকের (CA) অফিস সহ ধর্মতলার চৌরঙ্গি শঙ্কর আঢ্যর অফিসেও হানা দেয় ইডি। চলে জোর তল্লাশি।
শঙ্কর আঢ্যর সংস্থা ‘আঢ্য ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার হদিস পেয়েছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট অর্থাৎ FEMA আইন অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রা কনভার্ট করলে, পাসপোর্টের তথ্য বা ভ্রমণকারীর তথ্য জমা করতে হয়। তবে শঙ্কর আঢ্য আইন ভঙ্গ করে এই সব কোনও কিছুর উল্লেখ না করেই বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ইতিমধ্যেই ‘FEMA’ আইনে শঙ্কর আঢ্যর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে ইডি। এবার আজকের তল্লাশির পর এই মামলায় নতুন কোনো প্রভাবশালীর নাম উঠে আসে কি না সেদিকেও নজর থাকবে।