বাংলা হান্ট ডেস্ক : ভারত-মালদ্বীপ (India-Maldives) বিতর্ক চরমে উঠতেই মুইজ্জু (Mohammed Muizzu) সরকার জানায়, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যেই দ্বীপরাষ্ট্র থেকে ভারতকে (India) তার সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তারপর থেকেই নানা জল্পনা চলছিল কূটনৈতিক মহলে। মোদী (Narendra Modi) সরকার কি সত্যিই সেনা সরিয়ে নেবে নাকি ফের শুরু হবে দ্বিপাক্ষিক অলোচনা? এরকম নানা ফিসফাস শোনা যাচ্ছিল বিশিষ্ট মহলে।
এবার সামনে এল ভারতের জবাব। সূত্রের খবর, মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে রাজি হয়েছে ভারত সরকার। তবে সেনার বদলে নাকি দ্বীপরাষ্ট্রে মোতায়েন করা হবে ‘যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ’। যদিও ঠিক কাদের পাঠানো হবে সেই নিয়ে বিশদে কিছু বলেনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। তবে কূটনীতিকদের ধারণা, সেনার বদলে ‘সেনা’র প্রযুক্তিবিদদেরই মোতায়েন করবে ভারত।
অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে ‘সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে’ বলে মনে হলেও ভারতীয় সেনা ঠিকই মোতায়েন রইল। ভারতের জন্য এটি একটি বড় চাল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ক্ষমতায় এসেছেন ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতি নিয়ে। তার প্রধান লক্ষ্য হল, দ্বীপরাষ্ট্র থেকে ভারতকে দূর করা। আর শুরুর থেকেই সেই নীতিকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে অবিচল মুইজ্জু সরকার।
আরও পড়ুন : বদলে গেল ২০২৫ এর মাধ্যমিক রুটিন, কবে থেকে শুরু? বড় ঘোষণা পর্ষদের
মুইজ্জু সরকারের প্রথম লক্ষ্য ছিল মালদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনা সরানো। ভারত সরকারের কাছে সেই আর্জিও জানিয়েছিল মুইজ্জু সরকার। আর এবার দিন কয়েক আগেই বিবৃতি জারি করতে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভারত তাদের সেনা সরাতে রাজি হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ১৫ মার্চ নয়, ১০ মার্চের মধ্যেই মালদ্বীপের একটি জায়গা থেকে সেনাদের ফিরিয়ে আনবে ভারত। বাকি দুটি জায়গা থেকে সেনা সরানো হবে ১০ মে। তার বদলে পাঠানো হবে ‘প্রযুক্তিবিদদের’।
এখানে বলে রাখা ভালো, মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে ১৭ মার্চ। এবং দ্বীপরাষ্ট্রটির নির্বাচন প্রক্রিয়া ভারতের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মহম্মদ মুইজ্জু জয়লাভ করলেও পার্লামেন্টে তার দলের দখল অনেকটাই কম। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সোলির দল ‘মলদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি’র। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পার্লামেন্টে নিজের দখল বাড়ানোর জন্যই নির্বাচনের আগে আগেই ভারতের সেনা সরানোর হুমকি দিয়েছিলেন মুইজ্জু।
আরও পড়ুন : ৬ মার্চ নয়, সন্দেশখালি সফরের জন্য ‘নারী দিবস’কেই বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী, থাকবেন নির্যাতিতারা
কূটনীতিকদের ধারণা ‘ভারত বৈরিতা’কে অস্ত্র করে পার্লামেন্ট নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে চাইলেও, মুইজ্জু সরকারের এই প্রচেষ্টা সফল হবেনা। এবং পার্লামেন্ট নির্বাচনে মুইজ্জুর দাপটও খানিক কমবে। এবং ভারতের প্রতি মালদ্বীপের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক করবে এই পার্লামেন্ট নির্বাচনই। তাই ১৭ মার্চের এই নির্বাচন যেমন মালদ্বীপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনই গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্যেও।