বাতিল চাকরি হতেই একি কাণ্ড! টাকা ফেরত চেয়ে তৃণমূল নেতাদের বাড়ির সামনে ভিড়, ধাক্কাধাক্কি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত সপ্তাহে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) মামলায় রায়দান করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এক ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫৩ জন। বর্তমানে সেই নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এর মাঝেই সামনে এল বড় খবর। হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে চাকরি বাতিল হতেই তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভিড়।

২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের পর পূর্ব মেদিনীপুরের নানান ব্লকে দেখা যাচ্ছে এমনই চিত্র। তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতাদের বাড়ির সামনে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখে স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীদের মনে নানান রকম প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। অনেককে কারণ জিজ্ঞেস করা হলেও কেউ জবাব দিতে চাননি। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, টাকার বিনিময়ে গ্রামের বহু স্কুলে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। এবার আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়েছে প্যানেল। এবার কী করণীয় সেই ‘পরামর্শ’ নিতেই তৃণমূল নেতাদের বাড়ির সামনে আসছেন তাঁরা।

সপ্তাহান্তের দিন যেমন তমলুকের একজন নেতার বাড়ির সামনে ভোরবেলা থেকে লোকের ভিড় জমা হতে দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন নন্দকুমারের একটি বুথের তৃণমূল সভাপতি। উনি বলেন, ‘ছেলের চাকরি বাতিল হওয়ার কারণে পরামর্শ নিতে এসেছে’। কিন্তু পরামর্শ নেওয়ার হলে আইনজীবীর কাছে না গিয়ে তৃণমূল নেতার কাছে কেন এলেন? উত্তরে সেই ব্যক্তি বলেন, কিছু কারণ আছে। তবে সেটা বলা যাবে না।

আরও পড়ুনঃ বিরাট স্বস্তি! SSC-র ২৬০০০ চাকরিহারাদের জন্য বড় পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার

এদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের নানান প্রান্তে চাকরি বিক্রির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। তৃণমূলের বহু নেতা টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছিলেন। এবার হাই কোর্টের তরফ থেকে প্যানেল বাতিল করতেই আতঙ্ক চেপে বসেছে অনেকের মনে। যদি এখন টাকা ফেরত করতে হয়!

তবে জানা যাচ্ছে, কিছু কিছু নেতা সেই সময় চাকরির জন্য টাকা নিলেও পরবর্তীকালে তা ফেরত দিয়ে দেন। একটি নামী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাঁথি এলাকার একজন সমাজসেবী প্রায় শতাধিক চাকরিপ্রার্থীর থেকে ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা অবধি নিয়েছিলেন। এদিকে রেজাল্ট বের হওয়ার পর দেখা যায়, যারা টাকা দিয়েছিলেন তাঁদের কারোর নাম তালিকায় নেই।

SSC recruitment scam protest

এরপর ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা ওই ব্যক্তির বাড়ির সামনে ভিড় করলে তিনি টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলে জানান। তিন-চার মাস পর তিনি টাকা ফেরত দিয়ে দেন। তবে সবার থেকে ৫০,০০০ টাকা করে ‘প্রসেসিং ফি’ কেটে নেন। এদিকে বেশিরভাগ টাকা ফেরত পেয়ে যাচ্ছেন দেখে চাকরিপ্রার্থীদের অধিকাংশই ব্যাপারটা মুখ বুজে মেনে নেন। আর এভাবেই বিনা বিনিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন সেই ব্যক্তি। তবে তিনি একা নন, ওই এলাকায় এমন উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। আদালতের এক রায়ে এখন থরহরিকম্প দশা তাঁদের।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর