বাবা রাজমিস্ত্রি, মা বাঁধেন বিড়ি! DRDO-তে সুযোগ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিল বাংলার দীন দরিদ্র সুদীপ

বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেশের সুরক্ষায় নিজেকে যুক্ত করার জন্য ছোট থেকেই অবশ্য লড়াই করছিল পাঁশকুড়া ব্লকের পুরুষোত্তমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহাম্মদ মুরাদ মাইতি পাড়া এলাকার বাসিন্দা সুদীপ। এবার দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও-তে নাম লিখিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

জানা গিয়েছে, সুদীপের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। জীবনভর একের পর এক অট্টালিকা নির্মাণের কাজে যুক্ত থাকলেও অভাবের অড়নায় নিজের একখানা ঘরও তৈরি করে উঠতে পারেননি গোবিন্দ মাইতি। স্ত্রী নিলিমা আর তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোনরকমে দিন কেটে যায় তার। দুই মেয়ের বিয়ে অবশ্য আগেই দিয়েছেন। বিড়ি বাঁধেন স্ত্রী।

আরোও পড়ুন : ডাক্তারি পড়া আরও সহজ! এই ৩ জায়গায় খুলছে মেডিক্যাল কলেজ, ভোটের আগেই ঘোষণা মমতার

ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী সুদীপ বিজ্ঞান বিভাগে পূর্ব চিলকা লালচাঁদ হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকে ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছিলেন। এরপর তিনি শিয়ালদার পলিটেকনিক কলেজ থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে বি-টেক কমপ্লিট করেন। বর্তমানে আইআইটি গুয়াহাটিতে এম-টেক পাঠরত সুদীপের অবশ্য টার্গেট ছিল ডিআরডিও’তে যোগদান।

আরোও পড়ুন : খরচ মাত্র ৪০ টাকা! পেয়ে যাবেন দুর্দান্ত হোটেল, দিঘায় ভ্রমণ করতে চাইলেই এবার সোনায় সোহাগা

সুদীপ বলেন, ‘গত বছর আচমকা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কোমর ভেঙে যাওয়ায় বাবা আর কাজ করতে পারেন না। সংসার চালাতে মা এখনও বিড়ি বাঁধেন। মাথার উপর ছাদটুকুও নেই। তবুও স্বপ্ন ছিল দেশের সুরক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। আর সেই লক্ষ্যে এখন অনেকটাই সফল হতে পেরে খুশি।’ তবে, চিলকা লালচাঁদ হাই স্কুলের শিক্ষক শান্তনু চক্রবর্তী-সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা পাশে দাঁড়িয়েছেন।

drdo india 2a

মা নীলিমা মাইতি বলেন, ‘অভাবের সংসারে পড়াশোনার এই বিপুল খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম হতে হয়েছে। তবুও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চাই ছেলের ইচ্ছে পূরণ হোক।’ তবে রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে পড়ুয়াদের পড়ুয়াদের জন্য যখন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে ঠিক সেই সময় সুদীপের মতো ছেলেদের সাহায্য না পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও নানান মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

 

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর