বাংলাহান্ট ডেস্ক: টিভি খুললেই এখন কিছু খবর প্রায়ই দেখা যায়। বৃদ্ধ বাবা মা অত্যাচারিত হচ্ছে ছেলে বা মেয়ের কাছে। সম্পত্তির লোভে নিজের সন্তানের হাতে খুন পর্যন্ত হচ্ছেন অশীতিপর মানুষগুলোকে। যে মা গর্ভে ধরল, যে বাবা উদয়াস্ত খেটে মানুষ করে তুলল, তাদেরই এখন জায়গা হচ্ছে নয় রাস্তায় নয়তো বৃদ্ধাশ্রমে (Old Age Home)।
যৌথ পরিবার এখন লুপ্তপ্রায়। ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে শুধু নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি। অনেক সময়েই সেখানে বৃদ্ধ বাবা মায়ের জায়গা হয় না। অনেক দিন আগেই নিজের গানে কথাগুলো তুলে ধরেছিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। ‘বৃদ্ধাশ্রম’ শুনলে চোখ আপনা থেকেই চলে ভরে ওঠে।
কিন্তু অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী (Sudipta Chakraborty) বৃদ্ধাশ্রমকে এ ভাবে ভাবতে রাজিই নন। বাবা মা বৃদ্ধাশ্রমে গেলেই বরং বেশি ভাল থাকবেন, মনে করেন অভিনেত্রী। কেন এমন মত? সেটাও বড়সড় বার্তায় স্পষ্ট করেছেন সুদীপ্তা।
আসলে গতকাল ছিল মাদার্স ডে। নেটপাড়া জুড়ে মায়ের সঙ্গে ছবি দেওয়ার হিড়িক। বাদ যাননি তারকারাও। এত ছবির ভিড়ে এদিন একটি প্রশ্ন রেখেছিলেন অভিনেতা সপ্তর্ষি রায়। ‘বলছিলাম, সবাই যদি মাকে এত ভালোবাসেন তাহলে বৃদ্ধাবাসগুলোতে কারা থাকেন?! তাঁদের ছেলেমেয়েরা বোধহয় কেউই এই ফেবু পাড়ায় নেই!’
এই পোস্টেই নিজস্ব মতামত রাখেন সুদীপ্তা। কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা অন্য রকম। অভিনেত্রীর মতে, ‘বৃদ্ধাবাসের সঙ্গে মা বাবা কে না ভালোবাসার কোন সম্পর্ক কিন্তু নেই। আজকের নিউক্লিয়া পরিবারের দায়িত্ববান ছেলে মেয়ে রা বাবা মা কে বৃদ্ধাবাসে রাখেন তাঁদের সুবিধার জন্যই।’
নিজের বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে সুদীপ্তা বলেছেন, ‘আমরা সারাদিন কাজের পিছনে ছুটবো, টাকা রোজগার করবো, বাচ্চা মানুষ করবো, নানান দায়িত্ব পালন করবো সারাদিন আর মা বাবা একা একা বাড়িতে বসে টিভি সিরিয়াল দেখে একাকিত্ব কাটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করবেন।’
বয়স্থ বাবা মা একা থাকলে কোন জরুরি দরকারে ভরসা করার মতো কাউকে সঙ্গে সঙ্গে হাতের কাছে পাওয়া যায় না। তাই সুদীপ্তার মতে, বাবা মাকে এমন অবস্থায় ফেলে রাখার চেয়ে বরং বৃদ্ধাশ্রমে রাখা ভাল। অন্তত সেখানে সমবয়সী আর পাঁচজন মানুষের সঙ্গে কাটাতে পারবেন। জরুরি দরকার সঠিক পরিষেবাও পাবেন তৎক্ষণাৎ।
কিন্তু সুদীপ্তার যুক্তি পছন্দ হয়নি অনেকেরই। ছেলে মেয়ে ব্যস্ত বলেই বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হবে? পোস্টদাতা সপ্তর্ষি রায়ের মতে, বাবা মায়েরা বৃদ্ধ বয়সে ছেলে মেয়ের কাছে টাকাপয়সা, বাড়িগাড়ি কিছুই চান না। চান শুধু একটু সময়, নাতি নাতনির সান্নিধ্য।
অভিনেতা লিখেছেন, তিনি নিজে একাধিক বৃদ্ধাবাসগুলিতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মনের কষ্ট উজাড় করে দিয়েছেন অনেকেই। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। সেটাও লিখেছেন সপ্তর্ষি। অনেকে ছেলে মেয়ের আপত্তি সত্ত্বেও বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে থাকেন। তবে এই পোস্টে সামগ্রিক নেতিবাচক দিকটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন সপ্তর্ষি।