বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে মধুচক্র যত্রতত্র চলেছে, যা নিয়ে সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ। এবার এমন এক ঘটনা ঘটল যা দেখে সবাই প্রায় হতবাক। হাসপাতালের ভিতরেই চলছে রমরমিয়ে মধুচক্র। মধুচক্রটি চালাচ্ছেন খোদ ডেপুটি সুপার স্বয়ং। ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়া (Katwa) মহকুমা হাসপাতালে।
সূত্রের খবর, কাটোয়া হাসপাতালের নন মেডিক্যাল ডেপুটি সুপারের একটি ভিডিও ফুটেজ কাটোয়ার অতি পরিচিত একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন এক তরুণী। পোস্টের মাধ্যমে ওই তরুণী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন। অভিযোগ, মহিলাদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ডেপুটি সুপার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ভিতরেই মহিলাদের নিয়ে মধুচক্র চালান। ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে অভিযুক্ত ডেপুটি সুপার ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্তমানে এখন কাটোয়া হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে ঘরের ভিতরে এক মধ্যবয়স্ক মহিলার সঙ্গে তাঁকে অশালীন আচরণ করতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে এই ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে এই একই অভিযোগ উঠেছিল। কাটোয়া থানায় অভিযোগ ও দায়ের হয়।
২০১৩ সালে জুন মাসে প্রতিবন্ধী এক মহিলাকে শংসাপত্র দেওয়ার নাম করে তিনি শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। তখন ওই মহিলার স্বামী বাইরে ছিলেন। মহিলার কাছে সব জেনে তাঁকে নিয়ে থানায় যান তাঁর স্বামী।
থানায় মৌখিক অভিযোগের পর অভিযুক্তকে থানায় ডাকা হয়। সেখানে মোটা টাকার বিনিময়ে মীমাংসা হয় বলে অভিযোগ। তার পরে অবশ্য ওই মহিলা আর লিখিত অভিযোগ করেননি। হাসপাতালের মহিলা কর্মীরাও তাঁর লালসার শিকার হন বলে একাধিকবার অভিযোগ ওঠে। যদিও চাকরির ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খোলার সাহস পাননি।
কাটোয়ার বাসিন্দা কৌশিক দে এই ফেসবুক পোস্ট দেখে মন্তব্য করেন, “হাসপাতালের ভিতরে এই ধরনের শ্লীলতাহানি চললে মহিলারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে ভয় পাবেন। সেই সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে তাঁদের বাড়ির মহিলাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাতেও ভয় পাবে।”
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল জানান, তিনি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টটি দেখেছেন। তিনি বলেন, “ভিডিও ফুটেজটি হাসপাতালের ভিতরের। হাসপাতালের ভিতরে এই ধরনের ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। গোটা ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত হবে। ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলে উপযুক্ত শাস্তি হবে।” তিনি বিষয়টি ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। লিখিতভাবেও তিনি জানাবেন। তিনি বলেন, “এটা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা।
আমি যত দিন এখানে আছি তত দিন এমন কিছু আমার চোখে পড়েনি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। আমি অভিযুক্তের সঙ্গে রাতেই কথা বলেছি। তখন উনি দাবি করেন, এব্যাপারে কিছু জানেন না। সকালে ভিডিও দেখে বলতে পারবেন। শুনলাম অসুস্থতার জন্য উনি এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।”
কাটোয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় ডেপুটি সুপার ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) ভর্তি আছেন।