বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মেয়ে (Girl) বলতেই আমরা বুঝি হালকা পাতলা, ছিমছাম শরীরের গঠন। কিন্তু সেই মেয়েই যখন বডিবিল্ডার (Bodybuilder) হয়ে ওঠে, তখন সে সকলের নজরে আসে। নিউটাউনে (newtown) বসবাসকারী বছর উনিশের বাঙালি তরুণী ইউরোপা ভৌমিক (Europa Bhowmik) ঠিক এমনটাই উদাহরণ হিসাবে সবার নজর কেড়েছে।
বাবা পরিমল ভৌমিক হলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং মা সুপর্ণা ভৌমিক হলেন এক সাধারণ গৃহবধূ। ইউরোপার জন্মের সময় বাবা-মা দু’জনেই স্যামপোল ইউরোপা নামের একটি জাহাজে ছিলেন। তাঁর নাম রাখা নিয়ে জাহাজের নাবিকরা ভেবেছিলেন ছেলে হলে নাম রাখবেন স্যাম ও মেয়ে হলে নাম রাখবেন ইউরোপা। যা অনেকটা “লাইফ অফ পাই” সিনেমার মতো বলে জানায় ইউরোপা। এইভাবেই তাঁর জন্মসূত্রে রাখা নামের মাধ্যমে প্রথম থেকেই তিনি অন্যান্যদের থেকে একটু হলেও আলাদা ছিলেন।
ইউরোপার উচ্চতা ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি। ছোটবেলা থেকেই বন্ধুদের থেকে লম্বায় কিছুটা খাটো হওয়ার দরুন তাঁকে অনেক সময় নানান টিপ্পুনির শিকার হতে হয়। নামকরা বেসরকারী স্কুলে পড়াশুনা করেও সে তাঁর শারীরিক গঠন নিয়ে চিন্তিত ছিল। সেইকারণে ১২ বছর বয়সে জিম করতে শুরু করে ইউরোপা। কয়েকমাসের মধ্যে তাঁর শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখে বডিবিল্ডিং-র প্রতি তাঁর ভালোবাসা জন্মায়। এইভাবে ট্রেনারের সঙ্গে জিম করার মাধ্যমে সে ধীরে ধীরে পেশাদারীভাবে বডিবিল্ডিং-এ নাম লেখায়।
ইউরোপা ২০১৫ সালে কর্ণাটকে প্রথম বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। দুর্ভাগ্যবশত প্রথম প্রতিযোগিতায় হেরে গেলেও এরপর থেকে তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ইতিমধ্যেই বছর উনিশের বাঙালি তরুণী ইউরোপা ভারত তথা এশিয়ার মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ পেশাদার দেহ সৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় খ্যাতি অর্জন করে ফেলেছে। এইবছর জাতীয় বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থানাধীকারী হয় এবং এশিয়া (Asia) বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নেয় ইউরোপা। এই পেশায় মনোহর আইচ কিংবা গুণময় বাগচির নাম বারবার শোনা গেছে। কিন্তু প্রথম বাঙালী মহিলা হিসাবে এই প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মুখ রাখলেন ইউরোপা।