বাংলা হান্ট ডেস্ক: শ্রাবণ মাস হিন্দুদের কাছে একটি অত্যন্ত পবিত্র মাস। কারণ, এই মাসটিকে ভগবান শিবের (Lord Shiva) প্রিয় মাস হিসেবে মনে করা হয়। আর সেই কারণেই শিবকে সন্তুষ্ট করতে মন্দিরে মন্দিরে ভক্তদের প্রবল ভিড় পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি, মনস্কামনা পূরণের জন্য বহু দূর পাড়ি দিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালতে ছুটে আসেন ভক্তরা। এমতাবস্থায়, আমাদের দেশে শিবের একাধিক বিখ্যাত মন্দির রয়েছে।
কিন্তু আজকে আমরা যে মন্দিরের কথা আপনাদের জানাবো সেটির একটি অদ্ভুত বিশেষত্ব রয়েছে। যা জানার পর চমকে যাবেন সকলে। মূলত, এই প্রাচীন মন্দিরে ভক্তরা সিঁড়ি বেয়ে উঠলে সুমধুর সুর শুনতে পান। যার কারণে এই মন্দিরটিকে অন্যান্য মন্দির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বলে মনে করা হয়।
তামিলনাড়ুর ঐরাবতেশ্বর মন্দির: আমরা যে অলৌকিক মন্দিরটির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করছি সেটি ঐরাবতেশ্বর মন্দির নামে পরিচিত। এই মন্দিরটি তামিলনাড়ুর কুম্বাকোনাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যেখানে ভগবান শিবের আরাধনা করা হয়। জানা গিয়েছে, ঐরাবতেশ্বর মন্দিরটি দ্বাদশ শতকে রাজা রাজ চোল দ্বিতীয় নির্মাণ করেছিলেন। যা প্রাচীন স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন হয়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই মন্দিরটির নামকরণ করা হয়েছে ইন্দ্রদেবের ঐরাবত হাতির নামানুসারে। কথিত আছে যে, ঐরাবত হাতিটি ওই স্থানে ভগবান শিবের উপাসনা করেছিল। আর তাতেই প্রসন্ন হয়ে ভগবান শিব তার কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এইভাবেই মন্দিরটির নাম হয় ঐরাবতেশ্বর। এই মন্দিরটিতে দ্রাবিড় শিল্পকলা ফুটে উঠেছে যা দেখতে খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। যদিও, প্রাচীন মন্দির হওয়ার কারণে ঐরাবতেশ্বরের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। তবুও, এই মন্দিরটি আজও ভক্তদের কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করে।
সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ভেসে আসে সুর: ঐরাবতেশ্বর মন্দিরের একটি বিশেষ বিষয় হল, এই মন্দিরের সিঁড়িতে পা রাখার সময় সুমধুর সুর শোনা যায়। যা ভক্তদেরকে আকৃষ্ট করে। মূলত, এই মন্দিরের প্রবেশদ্বারের কাছে নির্মিত সিঁড়িগুলি একটি বিশেষ ধরণের পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যার উপর পা রাখলেই একটি অপূর্ব শব্দ তৈরি হয়।
শুধু তাই নয়, আপনি এই সিঁড়িতে সাতটি সুরও শুনতে পাবেন। তবে এর জন্য কাঠের সাহায্যে সিঁড়ির পাথরকে উপর থেকে নিচের দিকে ঘষতে হবে। এমনকি, এই সিঁড়ির সঙ্গে সামান্য কিছু ধাক্কা লাগলেও তা থেকে সুর বের হতে থাকে। আর এই কারণেই সারা বছর ভক্তদের ভিড় লেগে থাকা ঐরাবতেশ্বর মন্দিরটিতে। এমতাবস্থায়, আপনি যদি এই অলৌকিক মন্দিরটি দেখতে চান তবে আপনি ত্রিচি, মাদুরাই এবং চেন্নাইয়ের মতো শহরগুলি থেকে বাস পরিষেবা পেতে পারেন। এছাড়াও, আপনি কুম্বাকোনামে পৌঁছনোর জন্য ত্রিচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি নিতে পারেন। যেখান থেকে মন্দিরের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।