ভাঙা মোবাইলে কোডিং শিখে তিনটি App বানায় চাষির ছেলে, পড়ার সুযোগ পাচ্ছে Harvard-এ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সঠিক মেধা, শেখার ইচ্ছে এবং মনের জোরকে সম্বল করেই অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। এমনকি, এর মাধ্যমে যেকোনো বয়সেই গ্রহণ করা যায় সফলতার স্বাদও। সর্বোপরি ওই মনের জোরের কাছেই হেরে যায় চলার পথে আসা সমস্ত প্রতিবন্ধকতা। আর এই চিরসত্যকেই ফের একবার প্রমাণ করে দেখালো ১২ বছরের এক পড়ুয়া (Student)। এই অল্প বয়সেই নিজের যোগ্যতায় বিশ্বের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ হাসিল করল সে।

মূলত, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা কার্তিক জাখরের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যে মাত্র ১২ বছর বয়সেই আলোকিত করেছে তার গ্রামের নাম। দামি ফোন, ল্যাপটপ বা ট্যাবের সাহায্য ছাড়াই কার্তিক তিনটি অ্যাপ তৈরি করে এখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে।

একটি সাধারণ ফোন দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে সে: এই প্রসঙ্গে গুড নিউজ টুডে-র একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, কার্তিক হরিয়াণার ঝাজ্জার জেলার ঝাঁসওয়া গ্রামের বাসিন্দা। এমতাবস্থায়, শহরে বসবাসকারী পড়ুয়ারা যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পায় কার্তিকের বাড়িতে তা নেই। এমনকি, কোডিংয়ের কাজ শেখার জন্য তার কাছে ভালো কোনো মোবাইলও ছিলনা। তার ওপরে ছিল লোডশেডিংয়ের ঝামেলাও। যদিও, সমস্ত বাধাকে দূর করে কার্তিক বর্তমানে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ইউটিউব থেকে শিখেছে কোডিং: এই প্রসঙ্গে কার্তিক জানিয়েছে, তার বাড়িতে প্রথমে একটি কি-প্যাড ফোন ছিল। এমতাবস্থায়, লকডাউনের ফলে যখন স্কুল বন্ধ হয়ে অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়, তখন কার্তিকের বাবা একটি স্মার্টফোন কিনেছিলেন। প্রথম থেকেই কার্তিক ইউটিউবে কোডিং এবং অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত ভিডিওগুলি মনোযোগ সহকারে দেখত। আর এভাবেই ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে, কার্তিক কোডিং শিখে নেয়। শুধু তাই নয়, অ্যাপ তৈরি করারও চেষ্টা করে সে।

একটি ভাঙা মোবাইলের সাহায্যেই সে বানিয়ে ফেলে ৩ টি অ্যাপ: এই প্রসঙ্গে Aaj Tak-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, কার্তিকের ফোনের স্ক্রিনটি ভেঙে গিয়েছিল। যদিও, সে ভাঙা ফোনকে সম্বল করেই কোডিং শিখতে থাকে। একইসাথে তিনটি অ্যাপও তৈরি করে ফেলে। মূলত, এই তিনটি ছিল লার্নিং অ্যাপ। কোনো কোচিং বা শিক্ষকের সহায়তা ছাড়াই কার্তিক এই কাজ করে ফেলে।

বাবা করেন কৃষিকাজ: জানা গিয়েছে, কার্তিকের বাবা হলেন একজন কৃষক। পাশাপাশি, কৃষিকাজ করেই কোনোমতে সংসার চলে তাঁর। কার্তিক পরিবারের সবচেয়ে ছোট সন্তান। এছাড়াও, তার তিন দিদিও রয়েছে। উল্লেখ্য যে, কার্তিক প্রথমে সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত লুসেন্ট জিকে অনলাইন অ্যাপ তৈরি করে। দ্বিতীয় অ্যাপটির নাম হল শ্রী রাম কার্তিক লার্নিং সেন্টার। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং শেখা যাবে। তৃতীয় অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে শ্রী রাম কার্তিক ডিজিটাল লার্নিং। যার মাধ্যমে ডিজিটাল লার্নিং সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।

haryana1 62e64b8b80bb4

আপনাদের জানিয়ে রাখি, ইতিমধ্যেই কার্তিকের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে ৪৫ হাজার পড়ুয়া। এদিকে, এই বিরল কৃতিত্বের জন্য কার্তিক একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে। তবে, এবার সে হার্ভার্ডের মত জায়গায় পড়ার সুযোগ পেল। জানা গিয়েছে, সে সেখান থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করবে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর