বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজো, কালীপুজো পেরিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চর্চা (SIR Controversy)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সমীক্ষাকে ঘিরে শুরু হয়েছে হুমকি, হুঁশিয়ারি আর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের স্রোত। বিজেপির দাবি, এই সমীক্ষায় বাদ পড়বে প্রায় ১ কোটি নাম। বিজেপির এই মন্তব্যের জেরে রাজ্যের রাজনীতি কার্যত উত্তপ্ত।
শুভেন্দুর দাবি, ১ কোটিরও বেশি নাম বাদ পড়বে (SIR Controversy)
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ফের জানালেন, “সঠিক SIR হলে গত ১০-১২ বছরে বাংলাদেশের মুসলমান যেভাবে ঢুকেছে, কাঁটাতারের বেড়া না থাকার ফলে, তাতে ১ কোটিরও বেশি নাম বাদ যাওয়া উচিত।” শুভেন্দু বলেন , মৃত ভোটার, ডবল-ট্রিপল এন্ট্রি এবং ভুয়ো ভোটারদের নাম এই সমীক্ষায় বাদ যাবে। তিনি আরও জানান, “আমাদের দায়িত্ব নজরদারি করা। ২০০২ সালেও SIR হয়েছিল, তখন ২৬ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছিল। এবারও হবে। আর যারা ভারতীয় নয়, বাংলাদেশি মুসলমান, রোহিঙ্গা, তাদের নাম বাদ যেতেই হবে।”
“নির্বাচন কমিশন কি বিজেপির দাস?” প্রশ্ন ফিরহাদের
বিরোধী শিবিরের এই বক্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (SIR Controversy)। তিনি শুভেন্দু অধিকারী কে তোপ দেগে বলেছেন, “যদি বিরোধী দলনেতা নিজেই বলে দেন যে ১ কোটি নাম বাদ যাবে আর নির্বাচন কমিশন তার হুকুমের দাস হন, তাহলে গণতন্ত্র সত্যিই বিপদের মুখে। এটা নির্বাচন কমিশনের জবাব দেওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন যে, “নির্বাচন কমিশন কি বিজেপি নেতৃত্বের দলদাস, না স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা? কত নাম বাদ যাবে, সেটা বিজেপি বলবে কেন? যদি একটাও আসল ভোটার বাদ যায়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষই প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে।”
শুধু ফিরহাদ নন, একাধিক তৃণমূল মন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেছেন, “কোনও একজন ভোটারকেও যদি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, হরিশ্চন্দ্রপুর লন্ডভন্ড করে দেব।” একই সুরে সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “অন্যায়ভাবে যদি একটি লোকও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যায়, আমি সাবিনা ইয়াসমিন মোথাবাড়ি লন্ডভন্ড করে রাখব।”

একদিকে বিজেপির দাবি, “নিরপেক্ষভাবে সমীক্ষা হলে ভুয়ো নাম বাদ যাবেই।” অন্যদিকে তৃণমূলের আশঙ্কা, এই সমীক্ষাকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিকভাবে ভোটার বাছাই চলছে। শেষ পর্যন্ত ভোটার তালিকা তৈরির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু কে বাদ, কে থাকবে তা নিয়েই বাংলার রাজনীতি এখন ক্রমশই তপ্ত হয়ে উঠছে (SIR Controversy)।












