বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর চারটে দিন কেটে গিয়েছে। এখনও সব দল মাঠে নামেনি। তাতেই যে উত্তেজনা এবং দুর্ধর্ষ ফুটবল উপহার দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপ, তা দেখে পুলকিত সকল ফুটবলপ্রেমী। ইতিমধ্যেই এই বিশ্বকাপ দেখেছে এশিয়ার জাপান, সৌদি আরবের মতো দেশগুলির কাছে ইউরোপীয়ান জায়ান্ট জার্মানি ও লাতিন আমেরিকান দৈত্য আর্জেন্টিনার বশ্যতা স্বীকার। স্পেন এবং ইংল্যান্ডের মত ফেভারিট দলের দাপুটে জয়ও দেখেছে ফুটবল বিশ্ব।
এরপর আজ মাঠে নামতে চলেছে ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে সফল ফুটবল খেলিয়ে দেশ ব্রাজিল এবং এই প্রজন্মের সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ১৯৩০ ও ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ জয়ী উরুগুয়েও আজ মাঠে নামতে চলেছে। সব মিলিয়ে আজও একাধিক আকর্ষণীয় ম্যাচের জন্য প্রস্তুত ফুটবলপ্রেমীরা।
দিনের প্রথম ম্যাচটি গ্রুপ জি-এর সুইটজারল্যান্ড এবং ক্যামেরুনের মধ্যে। ব্রাজিল এবং সার্বিয়ার মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নামার আগে দুই দলই চাইবে প্রথম ম্যাচে নিজেদের ৩ পয়েন্ট তুলে নিতে। পরে শেষ গ্রুপ এইচ-এর লড়াইয়ে হিউন মিং সনের দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বিশ্বকাপের প্রথম সফল দল উরুগুয়ে। ফ্রেডরিকো ভালভার্ডে, ডারউইন নুনেজের মতো তরুণ ফুটবলার থাকলেও উরুগুয়ে মূলত অভিজ্ঞ তারকাদের ভরসাতেই এই বিশ্বকাপে মাঠে নামছে। কাভানি, সুয়ারেজের মতো কেরিয়ারের শেষ প্রান্তে পৌঁছানো স্ট্রাইকার এবং গদিন, গিমিনেজের মতো বয়স্ক এবং অভিজ্ঞ ডিফেন্ডাররা উরুগুয়ের দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সন নির্ভর দক্ষিণ কোরিয়ান আক্রমণের বিরুদ্ধে এই কিছুটা ধীরগতির ডিফেন্স কতটা কার্যকর হয় সেটা দেখার জন্য আগ্রহী হয়ে আছেন ফুটবল প্রেমীরা।
এরপর আজকের তৃতীয় ম্যাচে মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ঘানা। প্রীতি ম্যাচে সুইটজারল্যান্ডকে হারিয়ে ভালোই প্রস্তুতি সেরে রেখেছে আফ্রিকার দলটি। তাদের ফিজিক্যাল ফুটবলের সামনে পর্তুগাল কতটা আগ্রাসী ফুটবল খেলতে পারে সেদিকে লক্ষ্য থাকবে। পর্তুগাল দলে প্রতিভার অভাব নেই। রাফায়েল লিয়াও-য়ের মত গতিশীল ফুটবলার, বার্নার্ডো সিলভার মতো ড্রিবলিংয়ে দক্ষ তারকা, ব্রুনো ফার্নান্দেজের মতো চকিতে নিখুঁত থ্রু বল বাড়ানোর মতো বা দূরপাল্লার শটে গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেওয়ার মতো ফুটবলার, সবই মজুদ রয়েছে পর্তুগাল দলে। রয়েছে বিশ্বের সেরা সমস্ত সাইড ব্যাক। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ও তারকা ডিফেন্ডারেরও অভাব নেই দলে। রোনাল্ডোর সঙ্গে নিখুঁত লিঙ্কআপ সম্পন্ন করার জন্য রয়েছেন তরুণ তারকা জোয়াও ফিলিক্স। তা সত্ত্বেও পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস গত কয়েক বছরে দলটিকে নিখুঁত ফুটবল খেলাতে ব্যর্থ হয়েছেন। রোনাল্ডো একক দক্ষতা দেখাতে না পারলে চাপের মুখে ভেঙে পড়তে দেখা যায় দলটাকে। তাই ঘানার থমাস পার্টেই, ইনাকী উইলিয়ামসদের কতটা সামাল দিতে পারবে পর্তুগাল, সেই নিয়ে সন্দেহ থাকছে।
এরপর ভারতীয় সময় মধ্যরাত্রে সার্বিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের স্কোয়াডে, বিশেষ করে আক্রমণভাগে গভীরতা প্রবল। এমন অবস্থায় কেমন প্রথম একাদশ মাঠে নামাবেন ব্রাজিলিয়ান কোচ টিটে, সেটা শুধুমাত্র তিনিই জানেন। নেইমার, ভিনিসিয়াস, রাফিনহার মতন ফুটবলার সমৃদ্ধ ব্রাজিলিয়ান আক্রমণভাগ, যে কোনো ডিফেন্সকে ফালাফালা করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। উল্টোদিকে ব্রাজিল ডিফেন্সের দায়িত্বে থাকছেন থিয়াগো সিলভা, মার্কুইনসের মত অভিজ্ঞ তারকারা। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে ক্যাসেমিরোর মতো ফুটবলারের উপস্থিতি প্রতিপক্ষের যে কোন ফুটবলারকে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে সার্বিয়াও কিছু কম কঠিন প্রতিপক্ষ নয়। পর্তুগালের মত প্রতিপক্ষকে হারিয়ে বিশ্বকাপের জন্য সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করেছিল তারা। শেষ ছয় ম্যাচে তারা হারের মুখ দেখেনি। তারকা স্ট্রাইকার মিত্রোভিচ চলতি মরশুমে ইপিএলে নয় গোল করে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপে অনেক অঘটন ঘটতে দেখা গেছে। তাই সার্বিয়াকে কোনভাবেই হালকা ভাবে নিতে পারেননা নেইমাররা।