বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত ১০ জুন প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। মোট ২৭২ জন পড়ুয়া জায়গা করে নিয়েছে মেধাতালিকায়। পাশাপাশি, সামগ্রিকভাবে পাশের হারও এই বছর অত্যন্ত ভালো। কিন্তু, তারপরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ শুরু করে এই পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা। পাশাপাশি পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা। যদিও বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এমন একজন ছাত্রীর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে সফলতার সঙ্গে পাশ করেছে।
শুধু তাই নয়, তার এই ফলাফলের পেছনে রয়েছে এক অদম্য লড়াই এবং জেদের কাহিনি। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কার্যত দূরে সরিয়ে রেখেই হুগলির দিগসুই সাধনা বঙ্গ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৭৩ নম্বর পেয়েছে শ্রাবন্তী বাউলদাস। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেটি দেখে এই লড়াকু পড়ুয়ার প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা।
জানা গিয়েছে, অভাবের সাথে লড়াই করেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছে শ্রাবন্তী। তার বাবা-মা কেউই স্কুল যেতে পারেননি। ক্ষেতমজুরী এবং গৃহপরিচারকের মত কাজ করেই কোনোমতে সংসার চলছে তাদের। এমতাবস্থায়, বাবা-মার কাজেও সাহায্য করতে হয় শ্রাবন্তীকে। কিন্তু কাঠিন্য থাকা সত্ত্বেও নিজের পড়াশোনায় কোনো খামতি রাখেনি সে। বরং মন দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে সে পেয়েছে ৯৪ শতাংশ নম্বর।
পাশাপাশি, সামনে এসেছে শ্রাবন্তীর বিভিন্ন বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের তালিকাও। জানা গিয়েছে, সে বাংলায় পেয়েছে ৯৫, ইংরেজিতে তার নম্বর হল ৯২, এডুকেশনে ৯০, ভূগোলে ৯২, দর্শনে ৯৫ এবং পরিবেশ বিজ্ঞানে সে পেয়েছে ৯৯। এদিকে, দুর্দান্ত এই রেজাল্টের পরও রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়েছে শ্রাবন্তীর উচ্চশিক্ষার বিষয়টি। পাশাপাশি, সে রয়েছে সহযোগিতার আশাতেও। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটির ক্যাপশনে তার ফোন নম্বরটিও জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমান সময় যখন অনুত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা নিজেদেরকে পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য কার্যত ধর্নায় বসেছে ঠিক সেই আবহেই শ্রাবন্তীর মতো লড়াকু ছাত্রীরা আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছে যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প হয় না। আর এভাবেই সফলতা লাভ করেছে শ্রাবন্তী। এদিকে নেটমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওটিতেও কার্যত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দর্শক সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ৫৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন। এছাড়াও, শ্রাবন্তীর এই লড়াকু মানসিকতাকে কুর্ণিশ জানাচ্ছেন সকলেই।