বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই উন্নত হচ্ছে সবকিছু। পাশাপাশি, বিজ্ঞানের সৌজন্যে আরও সহজ হয়ে উঠছে জীবন। এমনকি, সেই রেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে পরিবহণ ক্ষেত্রেও। এখন কার্যত কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পাড়ি দেওয়া যায় কয়েকশ কিলোমিটার পর্যন্ত। স্থলপথের পাশাপাশি, আকাশপথ এবং জলপথেও হচ্ছে উন্নতি। এমতাবস্থায়, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হেলিকপ্টারের (Helicopter) ব্যবহারও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্ধারের কাজ থেকে শুরু করে কোনো হেভিওয়েট নেতার রাজনৈতিক সফর সবকিছুকেই সহজ করে দিয়েছে হেলিকপ্টার। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের উদ্দশ্যেও ব্যবহার করা হয় এই আকাশযানকে।
এমতাবস্থায়, আপনিও চাইলে হতে পারেন হেলিকপ্টারের মালিক। তবে, স্বাভাবিকভাবেই এই ক্ষেত্রে আপনাকে একটু বেশি খরচ করতেই হবে। মূলত, হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক আনুভূমিক পাখার ঘুর্ণনের সাহায্যে উর্ধ্বগতির সৃষ্টি হয়। আর এর সাহায্যেই আকাশে উড়তে পারে এটি। এছাড়াও, দুই বা ততোধিক ব্লেডের সমন্বয়ে গঠিত ওই পাখাগুলি একটি শক্ত দন্ড বা মাস্তুলকে কেন্দ্র করে ঘোরে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, “হেলিকপ্টার” শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ hélicoptère থেকে। এদিকে, আবার গ্রিক শব্দ হেলিক্ মানে হল “ঘুর্ণন” এবং “প্তেরোন্” শব্দটির অর্থ হল “পাখা”। এছাড়াও হেলিকপ্টারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এই আকাশযানটি একেবারে খাড়া ভাবে ওপরে উঠতে পারে এবং নিচেও নামতে পারে। সর্বোপরি, এটি ওঠা-নামার ক্ষেত্রে কোনো রানওয়ের প্রয়োজন হয়না।
আর ওই কারণেই যে কোনো দুর্গম পরিস্থিতিতে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে এটির জুড়ি মেলা ভার। হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে পাখার দ্বারা সৃষ্ট উর্ধ্বচাপ হেলিকপ্টারকে একই স্থানে ভেসে থাকতেও সাহায্য করে। ফলে হেলিকপ্টারকে দিয়ে এমন সব কাজ করানো যায় যা বিমানের মাধ্যমে করা সম্ভব না। এমনকি, এটি ভার বহনেও সক্ষম হয়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৪২ সালে ইগর সিকোরস্কির তৈরি করা নকশার হেলিকপ্টারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি, সর্বপ্রথম মোট ১৩১ টি হেলিকপ্টার তৈরি করা হয়।
এমতাবস্থায়, হেলিকপ্টার চালানোর ক্ষেত্রে জ্বালানির বিষয়টিতেও লক্ষ্য রাখতে হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একটি হেলিকপ্টার প্রতি ঘন্টায় ওড়ার ক্ষেত্রে ৮০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি খরচ করতে পারে। যদিও, এই খরচের পরিমান প্রতিটি হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে আলাদা হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার অনেক হেলিকপ্টারের প্রতি কিলোমিটার যেতে ৫ লিটার পর্যন্ত জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে।
এমতাবস্থায়, জানিয়ে রাখি যে, ভারতে একটি ৬ আসন বিশিষ্ট হেলিকপ্টারের দাম পড়বে প্রায় ২.৮ কোটি টাকা। এই হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার গতিবেগে ওড়া যাবে। শুধু তাই নয়, হেলিকপ্টারটি প্রতি ঘন্টায় ৬০ লিটার জ্বালানিও খরচ করবে। যদিও, প্রতিটি হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে দামও হয় ভিন্ন। পাশাপাশি, সেগুলির গঠনশৈলীও পরিবর্তিত হতে পারে।