বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) দুর্নীতি এবং হিংসার বিরুদ্ধে বাম ছাত্র যুব সংগঠনের ‘ইনসাফ সভা’ (Insaaf Sabha) ঘিরে এদিন ধর্মতলা (Dharmatala) চত্বরে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথমে ওয়াই চ্যানেলে সভা হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে মানুষের ভিড় ঠেকাতে ধর্মতলা মোড়েই তা স্থানান্তরিত করা হয়। অসংখ্য কর্মী সমর্থকদের মাঝে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দেন বাম নেতাকর্মীরা। সেই মঞ্চ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে সিপিএম (Cpim) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের (Mohammod Selim) হুঁশিয়ারি, “এফআইআর করা শিখিয়ে দেব।”
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক দুর্নীতি ইস্যুতে সরগরম রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। আবার অপরদিকে, সম্প্রতি আনিস খান হত্যা মামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এই সকলকে সামনে এনে শাসক দলকে কোণঠাসা করতে মরিয়া বিরোধী দলগুলি। সেই লক্ষ্যেই এদিন ‘ইনসাফ সভা’-র আয়োজন করে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই সংগঠন।
এক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতি পাওয়া না গেলেও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নাছোড়বান্দা থাকে বাম ছাত্র যুব সংগঠনগুলি। ইনসাফ সভা প্রসঙ্গে বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “মিছিলে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের কোন এক্তিয়ার নেই। বেলা বাড়তে দিন। কমরেড থেকে শুরু করে বাংলার মানুষ, বিক্ষুব্ধ সকলেই আমাদের মিছিলে আসবেন। দেখতে থাকুন।”
মীনাক্ষীদেবীর কথামতো এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক মানুষ যোগ দিতে থাকেন সিপিএমের মিছিলে। পরবর্তীতে সেই ভিড়ের কারণে এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সমগ্র ধর্মতলা চত্বর। আর সেই সভা থেকেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন সেলিম।
তিনি বলেন, “পরিবর্তনের নাম করে এরা গুন্ডা রাজত্ব চালাচ্ছে। দুর্নীতি থেকে লুঠ, সবকিছুই এই সরকারের আমলে হয়ে চলেছে। পুলিশকে বলছি, জাগ্রত জনতার নিকট আপনাদের কোন জোড়াজুড়ি চলবে না। পুলিশ প্রথমে অনুমতি দেয়নি। তবে আমাদের ছাত্র যুবরা ইনসাফ সভা করার পক্ষে ছিল। ইনসাফের লহর উঠেছ। অনুব্রত থেকে অভিষেক, গরু এবং কয়লা চোরদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্যই আমরা এই সভা ডেকেছি। সাধারণ মানুষের ন্যায় চাওয়ার জন্যই আজ আমরা নেমেছি রাজপথে। কালীঘাট পর্যন্ত এই আওয়াজ যাক।”
পরবর্তীতে তিনি বলেন, “বাংলার ছেলে মেয়েদের এরা দুর্দশার মুখোমুখি ফেলেছে। ওদের গাড়ি চাপা দিয়ে মেরেছে, অথচ পুলিশ কোন অভিযোগ নেয়নি। আনিস খানকে খুন করা সত্বেও অভিযোগ নেয়নি তারা। বরং তার পরিবারের বিরুদ্ধেই এফআইআর করা হচ্ছে। পুলিশকে বলতে চাই, এফআইআর করা শিখিয়ে দেবো আপনাদের।”
এদিন বাংলার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির তুলনা টেনে সেলিম বলেন, “শ্রীলঙ্কায় বেকার ছেলেমেয়েরা প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, চাকরি। অথচ পুলিশ সেই সকল ছেলে-মেয়েদের ওপরেই গুলি চালায়। পরবর্তীতে মানুষ সেখানকার রাষ্ট্রপতিকে তাড়িয়ে ছাড়ে। আর বাংলাতেও এখন দেখছি, কিভাবে অভিষেকের বাড়িতে পুলিশ পাহারা দিয়ে চলেছে। কোন ঘটনা ঘটলেই দেখি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীর নিকট উপস্থিত হন। কিন্তু আমরা মাথা নোয়াব না। বাংলায় যেভাবে একের পর এক দুর্নীতি হয়ে চলেছে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য।”