বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের ওপর আমেরিকার শুষ্ক আরোপ নিয়ে এবার মুখ খুললেন জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। ইউক্রেনের (Ukraine) রাজধানী কিয়েভে রুশ বিমান হামলার পর পরিস্থিতি ঘিরে ফের উত্তাল আন্তর্জাতিক কূটনীতির অঙ্গন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) যেমন নতুন করে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন, তেমনই এবার যেন তাঁকেই সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি । সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি আমেরিকার (America) সম্প্রচারক এবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে তেল বাণিজ্যে যুক্ত দেশগুলির উপরে শুল্ক আরোপ করা একেবারেই সঠিক পদক্ষেপ। তাঁর দাবি, মস্কো জ্বালানি রপ্তানিকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে এই রপ্তানি বন্ধ হওয়া উচিত এবং শুল্কই তার কার্যকরী উপায়।
শুল্ক আরোপ নিয়ে জেলেনস্কির মন্তব্য (Volodymyr Zelenskyy)
জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) এই মন্তব্যকে অনেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থানের সঙ্গে এক সুরে কথা বলা বলেই দেখছেন। কারণ ট্রাম্পও সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাশিয়ার পাশাপাশি তাদের তেল ক্রেতাদের, অর্থাৎ ভারত-সহ অন্যান্য দেশগুলিকেও নতুন করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে। উল্লেখ্য, ভারত রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল আমদানিকারী দেশ। এর আগে ট্রাম্প ভারতীয় আমদানির উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ এবং পরে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিলেন। মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের সিদ্ধান্তে নয়াদিল্লি তীব্র আপত্তি জানায় এবং তাকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘অন্যায্য’ বলে অভিহিত করে। তবু রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পথ বন্ধ হয়নি। বরং ভারতের পাশাপাশি চিন ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।
আরও পড়ুন:-“এত দ্রুত ক্ষমা নয়”, ট্রাম্প সুর নরম করতেই ভারতের শুল্ক “অপমানের” জবাব দিলেন শশী থারুর
এর মধ্যেই কিয়েভে রুশ হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ধ্বংস হয়েছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, ৮১০টি ড্রোন এবং একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া এই হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিরোধে ইউক্রেন ৭৪৭টি ড্রোন ও ৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। এই ভয়াবহ হামলার পর জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy) একদিকে শান্তি আলোচনার জন্য পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছেন, অন্যদিকে রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞার জন্য ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রশাসনের ভেতরে হতাশা ক্রমশ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ ট্রাম্পের আগের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থামেনি। তাই নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আনার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টও রবিবার বলেছেন, রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের উপর শুল্ক চাপালে পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে বাধ্য করা যাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এরপরই জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) মন্তব্য নতুন করে জল্পনা সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন:- এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে বয়কট করা সম্ভব নয় কেন? অবশেষে কারণ জানাল BCCI
এই আবহে জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) প্রকাশ্য সমর্থন নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের পক্ষে কূটনৈতিকভাবে বড় প্রাপ্তি। তবে এর ফলে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক যে আরও জটিল হতে চলেছে, তা স্পষ্ট। কারণ বারবার আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের নামই টেনে আনছেন ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসন। এখন প্রশ্ন, নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে নয়াদিল্লি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে!